মঙ্গলবার বান্দরবানে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে র্যালীর উদ্ধোধন করেন সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থোয়াইসা প্রু মাষ্টার। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক মাঈনউদ্দিন মাহিম। আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটি আহ্বায়ক ক্যহ্লাউ মারমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, আদিবাসীদের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও আদিবাসী নেতা অংচমং মারমা, আইনজীবী মাধবী মার্মা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন আদিবাসী নেতা দীনেন্দ্র ত্রিপুরা।
এর আগে র্যালি বের করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার ঐতিহ্যবাহী বোমাং রাজার মাঠ থেকে র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে জেলা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট-এ গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে জেলার মারমা, ম্রো, মুরং, ত্রিপুরা, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, চাকমা, খিয়াং, লুসাই, চাক, খুমি ও রাখাইন সম্প্রদায় অংশ নেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা পাঠ্যক্রম চালু, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন, ভ্রাতৃঘাটি সংঘাত বন্ধ, পর্যটন ও বনায়নের নামে ভূমি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ, বৃহৎ গোষ্ঠীর আগ্রাসন বন্ধ ও আত্ব-নিয়ন্ত্রণের অধিকারের উপর দাবি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক মাঈনউদ্দিন মাহিম বলেন, যে জাতি নির্যাতনের শিকার হয়ে, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে, মায়ের ভাষা-মুখের ভাষা রক্ষায় জীবন দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে। আজ তাদের হাতেই আবার আদিবাসীরা নির্যাতনে শিকার হলে এর চেয়ে বড় লজ্জা বা ঘৃনার কি হতে পারে। বর্তমান সময়ে এসে আদিবাসীরা নির্যাতনের শিকার হলে দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সাম্যবাদ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তাই এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। আদিবাসী অধিকার রক্ষায় সরকারকেই অগ্রণি ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
আদিবাসী নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার ও সংরক্ষণ কমিটির জেলা আহ্বায়ক জোয়াম লিয়ান আমলাই বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা আদিবাসীরা তাদের মাতৃভূমি থেকে দিন দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। উচ্ছেদ হতে বাধ্য করা হচ্ছে আদিবাসীদের। সংবিধানের ২৩ (ক) ধারায় “আদিবাসী” শব্দের পরিবর্তে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়’ হিসেবে উল্লেখ করে আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষন ও উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।
যার ফলে আদিবাসীদের অস্তিত্ব ঠিকিয়ে রাখার মৌলিক অধিকার, যেমন- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ভূমি-সংক্রান্ত অধিকারের বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। ২৩ (ক) ধারার মধ্য দিয়ে আমাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানো হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.