বুধবার রাঙামাটি সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পর রাতে ফের হামলায় আরও ২ কর্মী আহত হয়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের এক প্রেস বার্তায় রাঙামাটি সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষনা করেছে।
জানা যায়, ছাত্রলীগের রাঙামাটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাপ্পা এবং সাধারণ সম্পাদক আহমদ ইমতিয়াজ রিয়াদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এতে উভয়ের সমর্থিত নেতাকর্মীরা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। তার জেরে ২০ অক্টোবর দুটি গ্রুপে সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে ফের গেল বুধবার কলেজ ক্যাম্পাসে দুটি গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রিয়াদসহ কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়। এর জের ধরে রাতেই শহরের কলেজগেট এলাকার প্রতিপক্ষের সমর্থিতদের হামলায় নাজিম নামে অপর গ্রুপের আরও ১ কর্মী আহত হয়। নাজিমকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে উভয় গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাপ্পা জানান, পূর্বের ঘটনার রেশ ধরে সংগঠনের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল জাব্বার সুজন জানান,২০ অক্টোবর কলেজ ক্যাম্পাসে রিয়াদের নেতৃত্বে ছাত্র নামধারী কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। ওই ঘটনায় উদ্ভূত সমস্যা সুরাহার জন্য জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমার নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু প্রকাশ চাকমা দায়িত্বে অবহেলা কারণে তা সুরাহা হতে পারেনি। ফলে আগের ঘটনার রেশ ধরে বুধবারের কলেজে ঘটনা ঘটেছে।
তিনি দাবি করে বলেন, মূলত রিয়াদের নেতৃত্বে ছাত্র নামধারী কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী ঢুকে রাঙামাটি সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে বারবার এ ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলা চালাচ্ছে। যা কলেজ ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। বুধবার দুপুরের ঘটনার পর ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মী নাজিমের বাসায় গিয়ে হামলা করে তাকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। ওই সময় নাজিমের বাসায় লুটপাট চালায় তারা। মাদকসেবী সন্ত্রাসী বাবু, রাফিউল ইসলাম সোহাগ ও রবিউল ইসলাম নাজিম ও মহিউদ্দিন বাবু রিপন ওপর এই হামলা করে। ভবিষ্যতে কলেজ ক্যম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে যাতে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কলেজ প্রশাসনের কাছে দাবি জানান জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুজন।
এদিকে যোগাযোগ করা হলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল জাব্বার সুজনের বক্তব্য অস্বীকার করে সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মনগড়া কথাবার্তা। এসব কথাবার্তার কোনো ভিত্তি নেই।
ঘটনার ব্যাপারে কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রশীদ জানান, এ নিয়ে কোনো মামলা হয়নি। শুনেছি বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে মীমাংসার জন্য চেষ্টা চলছে।
অপরদিকে পৌর আওয়ামীরীগের সভাপতি মো.সোলাইমান চৌধুরী বলেন, কলেজের ঘটনা এসে পারিবারিক সন্ত্রাসে রুপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে কাঁঠালতলী এলাকায় ছাত্রলীগ নামধারীরা তার ছেলে মো. মহিউদ্দিন বাবু রিপনকে অতর্কিতভাবে মারধর করে। যেহেতু বিষয়টি কলেজের সংঘর্ষ সেই ঘটনা কেন শহরে ছড়িয়ে পড়ল তা একটু খতিয়ে দেখতে হবে। আর এগুলোর পিছনে কারা ইন্দন দিচ্ছে তা বের করার জন্য তদন্ত টীম গঠনের আহবান জানান।
এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন ও সাধারন সম্পাদক প্রকাশ চাকমার যৌথ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়েছে, জেলা ছাত্রলীগের জরুরী সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী নিদের্শ না দেওয়া পর্ষন্ত রাঙামাটি সরকারী কলেজে শাখার ছাত্রলীগের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
প্রেস বার্তায় রাঙামাটি কলেজের ছাত্রলীগের কমিটির অধীনে কোন নেতাকর্মী সংগঠিত যে কোন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জেলা ছাত্রলীগ তার দায়ভার গ্রহন করবে না।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.