লামা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে দূর্গম নাইক্ষ্যংমুখ এলাকায় গেল সোমবার বিকালে সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির ঘটনায় বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক উঠেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে নিহত সন্ত্রাসীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার পূণ্য রতন চাকমা (৩৭)তার বাড়ী রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার হিরার চর এলাকার রাঙ্গু চাকমার ছেলে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় এক সেনা সদস্য বাদী হয়ে মঙ্গলবার লামা থানায় ২টি ও আহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে আরো ১টি মামলা দায়ের করেছে। এজাহার সূত্রে জানা যায়,নিহত পুণ্য রতন চাকমাসহ আরো ২০ থেকে ২৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী লামা উপজেলার রুপসীপাড়াস্থ নাইক্ষ্যংমুখ এলাকায় চাঁদা দাবি করে আসছিল। গেল সোমবার সন্ত্রাসীরাা চাঁদা আদায়ের জন্য খবর গোপন সংবাদ পেয়ে রুপসীপাড়া সেনা ক্যাম্পের একটি সেনা টিম উক্ত এলাকায় ওৎপেতে থাকে। সন্ত্রাসীরা বিকেল ৪টার দিকে এলাকাবাসীকে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করছিল। এসময় চাঁদা আদায়কালে চ্যালেঞ্জ করলে সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। জানমাল রক্ষায় সেনাবাহিনীও পাল্টা গুলি ছুড়ে। উভয় পক্ষে গুলি বিনিময়ের সময় সন্ত্রাসী পুণ্য রতন চাকমা নিহত হয়।
এসময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ২জন শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। আহত দুই শিশু মাং প্রেন মুরুং (৮) চমেক হাসপাতালে ও দুই নোং মুরুং (৭) লামা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরে নিহত সন্ত্রাসী পুণ্য রতন চাকমার দেহ তল্লাশী করে কোমরে প্রসেস (গুলি বান্ডুলী) থেকে রক্ষিত ৪৯ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, বুক পকেটে ১০ হাজার ১২০ টাকা, ১টি জাতীয় পরিচয় পত্র, ১টি স্কুল ব্যাগ, ৩টি জলপাই রঙের ইউনিফরম প্যান্ট, ২টি ইউনিফরম ক্যাপ, ২ জোড়া রাবারের জুতা উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, সেনাবহিনীর পক্ষ থেকে নিহত সন্ত্রাসী পূন্য রতন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির অস্ত্রধারী সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহত সন্ত্রাসী পূণ্য রতন চাকমার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবানে জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সন্ত্রাসী পুণ্য রতন চাকমা রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার হিরার চর এলাকার রাঙ্গু চাকমার ছেলে।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় আহত শিশুর বাবা পালট মুরুং বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা করেছে। মামলা নং- ০৭, তারিখঃ ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং। অপরদিকে হত্যা ও অস্ত্র আইনে অভিযোগ এনে রুপসীপাড়া সেনা ক্যাম্পের সার্জেন্ট মোঃ ওলিয়ার আরো ২টি মামলা দায়ের করেছেন। একটি হল হত্যা মামলা নং- ০৮, অপরটি হল অস্ত্র মামলা নং ০৯, তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং।
আলীকদম সেনা জোনের ভারপ্রাপ্ত জোন কমান্ডার মেজর মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক। সন্ত্রাসীদের কোন রকম কার্যকলাপ এ এলাকায় বর্দাস্ত করা হবে না।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.