জুন্ম জনগনের অস্তিত্ব রক্ষায় ও আত্ননিয়ন্ত্রনাধিকার আদায়ের লক্ষে কঠিন আন্দোলনের আহ্বান সন্তু লারমার ।

Published: 10 Nov 2014   Monday   

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগনের অস্তিত্ব আজ ধ্বংসের চরম আকারে পৌঁছেছে। শাসক গোষ্ঠী পার্বত্য চুক্তির ১৭ বছরেও চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের নামে শাসক গোষ্ঠী একের পর এক চুক্তি বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।  তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুন্ম জনগনের অস্তিত্ব রক্ষায় ও  আত্ননিয়ন্ত্রনাধিকার আদায়ের লক্ষে আরও  কঠিনতর আন্দোলন-সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য সবা্ইকে আহ্বান জানান। সোমবার রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক সাংসদ প্রয়াত মানবেন্দ্র নারায়ন লামার(এমএন লারমা) ৩১ তম মৃত্যূ বার্ষিকী উপলক্ষে অয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এ কথা বলেন। জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্যাঞ্চল শাখা ও এমএন লারমা মোমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ফোরাম পার্বত্যাঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। বিশেষ আলোচক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য স্নেহ কুমার চাকমা, এমএন লারমা মোমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক বিজয় কেতন চাকমা, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, শিক্ষাবিদ প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রনজিত দেওয়ান, লেখক ও কবি শিশির চাকমা ও সাবেক বেতার শিল্পী তৃপ্তিরাণী তালুকদার। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় শহীদ বেদীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বল  ও ফানুস বাতি উড়ানো হয়। সন্তু লারমা আরও বলেন, চার কুচক্রী গিরি-প্রকাশ-দেবেন-পলাশ নেতৃত্বে বিভেদপন্থীরা জুম্মজনগনের অস্তিত্ব বিলোপ এবং জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে চিরতরে ধ্বংস করে দিতে প্রয়াত মহান নেতা এমএন লারমাকে হত্যা করেছিল। এর পিছনে বিদেশী ষড়যন্ত্রসহ শাসক গোষ্ঠীর একটি অংশ হাত ছিল। এই ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। তাই সবাইকে এ ব্যাপারে আরও অধিকতর সজাগ থাকতে হবে। ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর এমএন লারমাকে হত্যকারী বিভেদপন্থী ও চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফ একই যোগসুত্র রয়েছে  উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন, ইউপিডিএফের প্রসিত খীসা, সংস্কারপন্থী রুপায়ন দেওয়ান-সুধাসিন্ধু খীসা তাতিন্দ্র লাল চাকমা সাথে এমএন লারমা হত্যকারীদের যে যোগ সূত্র রয়েছে তা পরিস্কার। তাই তাদের ব্যপারে অধিক সর্তক থাকতে হবে। ইউপিডিএফ ও সংস্কার পন্থীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে জিস্মি করে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করছে। ইউপিডিএফ গত ১৭ বছরে জনসংহতি সমিতির ৯১ জন সদস্যসহ দুই শতাধিক লোককে হত্যা করেছে। সন্তু লারমা বলেন, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে জনসংহতি সমিতির একটি অতি ক্ষুদ্র অংশ রুপায় দেওয়ান-সুধাসিন্ধু খীসা-তাতিন্দ্র লাল চাকমার সরকারের সাথে আতাঁত করে পার্বত্য চুক্তিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে হাত মিলিয়েছে। তাই গিরি-দেবেন-প্রকাশ-পলাশ, ইউপিডিএফ ও সংস্কার পন্থীদের মধ্যে কতটকু সম্পর্ক রয়েছে তা জেনে নেয়া অত্যন্ত জরুরী। তিনি বলেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ দুর্নীতিগ্রস্থ ও চুক্তি বিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। চাকুরীর ক্ষেত্রে ঘুষ নেয়া হচ্ছে। তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসকরা সেই ১৯০০ সালের ক্ষমতা প্রয়াগ করে চলেছে। সন্তু লারমা আরও বলেন, মহান নেতা  এমএন লারমা যুব বয়স থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম জনগনের আতœনিয়ন্ত্রনাধিকার  আদায়ের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। যুব বয়সে কাপ্তাই বাঁেধর বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু সেই সময়ের শাসক গোষ্ঠীর নির্যাতনের ভয়ে সুশীল সমাজ থেকে শিক্ষিত সমাজ এগিয়ে আসেননি। আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। তিনি বলেন, মহান নেতা এমএন লারমা অমৃত্যু পর্ষন্ত আন্দোলন করে গেছেন। তার এই বিপ্লবী আদর্শ ও স্বপ্নকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে জুম্ম জনগনের  আত্ননিয়ন্ত্রনাধিকার আদায়ের লক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে আরও বেশী করে সামিল হতে হবে।

–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত