রাঙামাটিতে তিন দিন ব্যাপী ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর নাট্য উৎসবের উদ্বোধন

Published: 18 Jan 2018   Thursday   

রাঙামাটিতে তিন দিন ব্যাপী ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর নাট্য উৎসব শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী দিনে ইয়ং বাংলা পুরুস্কার প্রাপ্ত জুম ফুল থিয়েটারের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় হুত্তেজ্যাপেদার ঘর তামাজা।


রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউট মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী নাট্য উৎসবের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে নাট্য উৎসবের বক্তব্যে দেন রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রুনেল চাকমা। এসময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য সবির কুমার চাকমা, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিষ্টিটিউটের সাবেকপরিচালক সুগত চাকমা প্রমুখ।


নাট্য উৎসবে উদ্বোধনী দিনে ইয়ং বাংলা পুরুস্কার প্রাপ্ত জুম ফুল থিয়েটারের পরিবেশনায় চাকমা ভাষায় হুত্তেজ্যাপেদার ঘর তামাজা মঞ্চস্থ করা হয়। নাটকটির রচনায় ও পরিচালক জুম ফুল থিয়েটারের পরিচালক হলেন নিরুপম চাকমা। এছাড়া শুক্রবার খাগড়াছড়ির য়ামুক নাট্য গোষ্ঠী পরিবেশনায় নুখুং চামিরি এবং রাঙামাটি ঝগড়াবিল ফু-কালাং সাংস্কৃতিক একাডেমীর পরিবেশনায় আক্কল নাটক মঞ্চস্থ হবে।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের ভাষা ও বর্ণমালা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রক্ষায় বদ্ধ পরিকার তাই স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকটা ভাষাভাষি মানুষ তার নিজস্ব স্বত্তা বিকশিত করুক এটাই আমরা চাই। তিনি আরো বলেন, নাটক জীবনের কথা বলে এই নাট্য উৎসবে যে সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠী তাদের ভাষায় নাটক পরিবেশন করবে সেটা যাতে কোন বিকৃত না হয় সেই দিকে সকলকে লক্ষ্য রাখার আহবান জানান।


সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকতার কারনেই একুশে ফেব্রুয়ারী শুধুমাত্র বাংলাদেশে উদযাপিত হচ্ছে না, একুশে ফেব্রুয়ারী এখন আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস হিসিবে স্বিকৃতি পেয়েছে। এ দিবসে সারা পৃথিবীতে মর্যাদার সাথে উদযাপন করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতির বসবাস। রাঙামাটির জেলার বাইরে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় গাড়, হাজং সাওতাল বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের বসবাস।


তিনি বলেন, দীর্ঘ দিনের চাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূরণ করেছে। আমরা যেন সকল ভাষাভাষীর মানুষ নিজস্ব বর্ণমালায় লেখাপড়া শিখি। নিজেদের ভাষায় সাহিত্য চর্চ্চা করা যে সুযোগ তিনি সৃষ্টি করেছেন।


তিনি বলেন, রাঙামাটিতে ৫০জন শিক্ষক ভোলান্টিয়ার হিসেবে বিভিন্ন ভাষাশিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে বিনা বেতনে। বিনা বেতনে কাজ করাটা খুবই কঠিন। সেজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি আবেদন করেছে ভাতা প্রদান করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী তাদের সেই আবেদন আমলে তাদের বেতনসহ বিভিন্ন ভাতা প্রদানের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছে এবং এই চিঠি প্রেরণ করেছে। আমরা আশা করছি তারা অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীর ন্যয় বেতন ও অন্যান্য ভাতা পাবে বলে আমরা আশা করছি।


তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বর্ণমালা ও ভাষাকে কিভাবে আরো বিকশিত করা যায় সেজন্য আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইন্সিটিউিটে পার্বত্য চট্টগ্রাম ফেকালিটি আছে সেভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং আমাদের অনেক ভাষাবিদও সাহিত্যক এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকটা ভাষাভাষি মানুষ তার নিজস্ব স্বত্তা বিকশিত করুক। সকলে যার যার নয্য অধিকার তারা পায়। আজকের এই নাট্য উৎসবে যার যার ভাষায় নাটক পরিবেশন করবে এটা অত্যান্ত ইতিবাচক দিক এটা আরো উন্নতি হউক।


সভাপতির বক্তব্যে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের ভাষা রক্ষায় নিজস্ব বর্ণমালার বই ছাত্র ছাত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছে। স্কুল জীবন থেকে তাদের স্ব স্ব মাতৃ ভাষা লেখাপড়া করার মাধ্যমে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা করতে পারবে। তিনি বলেন, গত বছর রাঙ্গামাটি জেলায় প্রথম বারের মতো ১৭ হাজার এবং এবছর প্রায় ২৭ হাজার ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী ছাত্র ছাত্রীকে হাতে এই বই তুলে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শিক্ষকদের মাতৃভাষায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। আগামীতে আরো শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত