পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, সামজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে সেনাবাহিনী। তারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দক্ষ নাগরিক গঠনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সেনাবাহিনী। কম্পিউটার ও সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তারই প্রতিফলন। তিনি সেনাবাহিনীকে আরও গভীরে গিয়ে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সন্তু লারমা আরও বলেন, বিগত সময়ে আমরা পার্বত্যাঞ্চলের বুকে নির্মম বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করি। আমরা সেই বাস্তবতার শিকার। বর্তমানে পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মমত্ববোধ ও আন্তরিকতা নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী। এ অঞ্চলের দূরদির্শতায় পিছিয়ে নেই তারা। পার্বত্যাঞ্চলে জনগণের উন্নয়নে ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীর কর্মতৎপরতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বুধবার রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর পরিচালিত কম্পিউটার ও সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রাঙামাটি রিজিয়ন সদর দফতরের দরবার হলে অনুষ্ঠিত সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মানিক সামসুদ্দীন মো. মঈনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রিদওয়ান-আল মাহমুদ ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা জামান। এসময় জেলা পুলিশ সুপার সাঈদ তারিক, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, রাঙামাটি পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ভুট্টোসক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সন্তু লারমা রাঙামাটির সেনাবাহিনী পরিচালিত কম্পিউটার ও সেলাই প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন । এসময় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে সন্তু লারমাকে শুভেচ্ছা স্বরুপ ক্রেস্ট তুলে দেন জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মানিক সামসুদ্দীন।
সন্তু লারমা বলেন, সেনাবাহিনী নিয়মিত দায়িত্ব-কর্তব্যের বাইরে জনকল্যাণে অনেকগুলো সামাজিক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে- যেগুলো অত্যন্ত গুরুত্ববহ। একইভাবে পার্বত্যাঞ্চলেও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে জনকল্যাণমূলক ব্যাপক সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী। জনকল্যাণমূলক কাজে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সন্তু লারমা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব দেশ। এ দেশকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে দায়িত্ব সবার। সেনাবাহিনীর তো আছেই। তাই গণমানুষের স্বাধিকার, অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও দরকার সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা। পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির উন্নয়নে সবাইকে একে অপরের প্রতি সহনশীল, সহমর্মী, বিশ্বাস, সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব ও শ্রদ্ধার সঙ্গে সহাবস্থান বজায় রাখার আহবান জানান সন্তু লারমা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রিদওয়ান-আল মাহমুদ বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা নতুন নয়। সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সমাজের উন্নয়নে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা সার্বক্ষণিক। পার্বত্য চট্টগ্রামে আইনশৃংখলা রক্ষার পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করছে সেনাবাহিনী। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ উদ্যোগ।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা জামান বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি সবাইকে সবাই একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.