• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
পার্বত্যাঞ্চল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ১২জন ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা                    ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে বিজু,সাংগ্রাই, বৈসুক উৎসব শুরু                    বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু উপলক্ষে রাঙামাটিতে বর্নাঢ্য র‌্যালী                    বান্দরবানে ধরপাকড়,হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ ও আটকদের মুক্তির দাবি তিন সংগঠনের                    বিজু উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর আর্থিক সহায়তা                    রাঙামাটিতে জুম উৎসবের আয়োজন                    বন বিভাগের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সন্মেলন                    বিলাইছড়িতে আগুনে ৬টি বসতঘর পুড়েছে, আহত ১                    পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস কর্মসূচি পালন                    রাবিপ্রবি’তে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত                    বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধীতে বিজিবির মহাপরিচালকের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন                    রাঙামাটিতে নতুন সিভিল সার্জন ডাঃ নূয়েন খীসা                    রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের দরপত্র প্রকাশ নিয়ে গোপণীয়তার অভিযোগ                    কাপ্তাইয়ে গাছ কাটার অনুমতি না থাকায় ব্রীজ নির্মাণে অশ্চিয়তা                    সুখ-শান্তি কামনায় বালুখালীবাসীর মহাসংঘদান                    বরকলে অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু, ১৪ জন অসুস্থ, এলাকায় আতংক                    রাঙামাটিতে জেনারেল হাসপাতালের সাথে সনাকের অ্যাডভোকেসি সভা                    গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি                    স্বপ্ন প্রতিবন্ধীর সভাপতি ত্রিনা চাকমা ও সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী                    ঘাতক ট্রাক প্রাণ কেড়ে নিল রাঙামাটি সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষাথী সালেহিনের                    চ্যাম্পিয়ন লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ                    
 
ads

মহালছড়িতে জাঁকজমকভাবে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন

মিল্টন চাকমা মহালছড়ি : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 31 Oct 2020   Saturday

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। প্রতি বছর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাসব্যাপী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বর্ষাবাস  পালন করে থাকেন।

 

কিন্তু এবারে মল মাস(অধিক মাস)হওয়াতে  পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এক মাস পিছিয়ে বর্ষাবাস শুরু করে। বর্ষাবাস শেষে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রবারণা পূর্ণিমা অনুষ্ঠান।

 

এই ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষকে  কেন্দ্র করে  খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে শনিবার শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বিহার গুলো বিভিন্ন সাজ সজ্জা দিয়ে সাজানো হয়। এছাড়াও বিভিন্ন দানীয় বস্তু দান, বুদ্ধ পূজা, স্ব-ধর্ম দেশনা সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

 

অন্যদিকে মহালছড়ি প্রজ্ঞা বিদর্শন বৌদ্ধ বিহার কমিটি ও  প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন কমিটি, এবং রাখাইন যুব সমাজের আয়োজনে সাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১১টায়  মহালছড়ির চেঙ্গী নদীতে রিছিমি (বড় করে ময়ূরপঙ্কী আদলে সজ্জিত কল্প জাহাজ) ভাসা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

সকাল ৬ টার সময় বুদ্ধ পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এ সময় পঞ্চশীল প্রার্থনা ও গ্রহন সহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী সম্পন্ন করা হয়। এরপর সকাল ১১ টার সময় মোমবাতি প্রজ্বলন করে জাহাজ ভাসা উৎসব শুরু হয়।

 

একটা ইঞ্জিন চালিত নৌকার উপর এই কল্প জাহাজ তুলে কাপ্তাই লেইক মহালছড়ি অংশের বিভিন্ন গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। এবারের কল্প জাহাজ টি বানানো হয়েছে ময়ুরপঙ্খীর আদলে। এই জাহাজ ভাসা উৎসবে মহালছড়ির বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন অংশগ্রহণ করে।

 

উল্লেখ্য যে, কথিত আছে এক সময় বৈশালীতে দূর্ভিক্ষ, মহামারি ও অমনুষ্যে এই ত্রি-বিধ উপদ্রবে রাজ্যে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করেছিল। তাতে প্রজারা চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন এবং রাজার কাছে সেই বার্তা পৌঁছালেন। রাজাও প্রজাদের এমন অবস্থা দেখে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সহসায় এই দুরবস্থা থেকে পরিত্রান লাভের জন্য রাজ্যের রাজা প্রমূখ অমাত্যের উপদেশে বুদ্ধের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেন।

 

বুদ্ধ তখন রাজগৃহে বিম্বিসার রাজার দানকৃত পূর্বারাম বিহারে অবস্থান করছিলেন। বৈশালীবাসীগণ মহালি লিচ্ছবি ও রাজা পুরোহিত পুত্রকে রাজা বিম্বিসারের কাছে পাঠালেন এবং বিনীত ভাবে এই বিষয় অবগত করলেন। বিম্বিসার রাজা এবং মহালি লিচ্ছবি সকলেই বুদ্ধকে ফাং করলেন বৈশালীতে গমন করার জন্য। বুদ্ধ সেই ফাং ( আমন্ত্রন) গ্রহন করে বিম্বিসার রাজার সাথে বৈশালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। 

 

বিম্বিসার রাজা বুদ্ধের গমনা-গমনের সকল রাস্তা সজ্জিত করে দিল। গঙ্গা নদীতে রাজা বিম্বিসার ২টি নৌকা সজ্জিত করে বুদ্ধের জন্য সুব্যবস্থা করে দিলেন, যাতে বুদ্ধ তার পাঁচশত শিষ্যসহ সুন্দর ভাবে বৈশালী পৌঁছতে পারেন। 

 

বুদ্ধ প্রমুখ পাঁচশত শিষ্যসহ বৈশালীতে উপস্থিত হলে আনন্দ স্থবিরকে বলেছিলেন, আনন্দ রতন সূত্র পাঠ করে সমস্ত বৈশালী রাজ্যে মঙ্গলাজল সিঞ্চন কর! যাতে করে রাজ্যের সমস্ত উপদ্রব দুরীভুত হয়। আনন্দও বুদ্ধের উপদেশে তা প্রতিপালন করলেন। জল সিঞ্চনের সাথে সাথে সারা বৈশালী থেকে সমস্ত মহামারি দুরীভুত হয়ে গিয়েছিল। বৈশালী আবার সেই পুরনো পরিবেশকে ফিরে পেয়েছিল। বৈশালী রাজারা বুদ্ধকে আবারও যথাযোগ্য পূজা দিয়ে রাজগৃহের পথে যাত্রা করলেন।

 

এদিকে, নাগলোকের মহাঋদ্ধিমান নাগেরা চিন্তা করলেন মনুষ্য পুত্ররা বুদ্ধকে কতই পূজা করছে। আমরাও এই সুযোগে বুদ্ধকে স্বশরীরে পূজা করতে যাব। সাথে সাথে তারাও নাগলোক থেকে পাঁচশত নাগরাজ বিমাণের (জাহাজের) মত ঋদ্ধিময় ফণা বিস্তার করে বুদ্ধ প্রমূখ পাঁচশত শিষ্যের মাথার উপরে স্থাপিত করলেন। এই ভাবে নাগরাজের এই ঋদ্ধিময় বিমাণের (জাহাজের) রূপ ধারণের মাধ্যমে পূজা দর্শন করে স্বর্গের দেবতা সহ ব্রহ্মলোকের ব্রহ্মারাও তা অবলোকন করে বুদ্ধকে পূজা করতে এসেছেন। সেই দিবসটি ছিল বর্ষাবাসের সমাপ্তি দিবস ‘প্রবারণা’। 

 

সেই দিবসে বুদ্ধ প্রমুখ পাঁচশত শিষ্যকে মনুষ্যগণ, নাগগণ, দেবগণ, ব্রহ্মাগণ শ্বেতছত্র ধারণ করে ধর্মীয় পতাকা উন্ডীয়ন করে ঋদ্ধিময় পূজা করেছিলেন। বুদ্ধ সেই পূজা লাভ করে রাজগৃহে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। 

 

এই মহান চিরসত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর জাতী ধর্ম, বর্ণ নির্বেশেষে বৌদ্ধরা সকলেই রিছিমি (কল্প জাহাজ) ভাসা উৎসব উদযাপন পালন করে থাকে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
আর্কাইভ