• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
পার্বত্যাঞ্চল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ১২জন ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা                    ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে বিজু,সাংগ্রাই, বৈসুক উৎসব শুরু                    বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু উপলক্ষে রাঙামাটিতে বর্নাঢ্য র‌্যালী                    বান্দরবানে ধরপাকড়,হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ ও আটকদের মুক্তির দাবি তিন সংগঠনের                    বিজু উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর আর্থিক সহায়তা                    রাঙামাটিতে জুম উৎসবের আয়োজন                    বন বিভাগের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সন্মেলন                    বিলাইছড়িতে আগুনে ৬টি বসতঘর পুড়েছে, আহত ১                    পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস কর্মসূচি পালন                    রাবিপ্রবি’তে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত                    বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধীতে বিজিবির মহাপরিচালকের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন                    রাঙামাটিতে নতুন সিভিল সার্জন ডাঃ নূয়েন খীসা                    রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের দরপত্র প্রকাশ নিয়ে গোপণীয়তার অভিযোগ                    কাপ্তাইয়ে গাছ কাটার অনুমতি না থাকায় ব্রীজ নির্মাণে অশ্চিয়তা                    সুখ-শান্তি কামনায় বালুখালীবাসীর মহাসংঘদান                    বরকলে অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু, ১৪ জন অসুস্থ, এলাকায় আতংক                    রাঙামাটিতে জেনারেল হাসপাতালের সাথে সনাকের অ্যাডভোকেসি সভা                    গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি                    স্বপ্ন প্রতিবন্ধীর সভাপতি ত্রিনা চাকমা ও সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী                    ঘাতক ট্রাক প্রাণ কেড়ে নিল রাঙামাটি সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষাথী সালেহিনের                    চ্যাম্পিয়ন লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ                    
 
ads

রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সরকারের হিংসাত্মক ও মানবাধিকার-বিরোধী কর্মকান্ডকে তীব্র নিন্দা
পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে চাকমা রাজার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 17 Sep 2017   Sunday

চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় মিনায়নমরের রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে যাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে যাতে কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

পাশাপাশি তিনি মিনায়মার সরকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর বৈষম্যমূলক, হিংসাত্মক ও মানবাধিকার-বিরোধী কর্মকা-কে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে তাদের স্বদেশের স্বস্ব গ্রামে সন্মানজনকভাবে, নিরাপদভাবে ও যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান সাপেক্ষে প্রত্যাবর্তনের উদ্দ্যেশ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণের সরকারের কাছে আহ্বান জানান।

 

রোববার রাঙামাটিতে চাকমা রাজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং এ চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় এই আহ্বান জানান।


চাকমা রাজা আরো বলেন, যতদিন পর্যন্ত তা সম্ভবপর না হয়, রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে যথাযথ আশ্রয় প্রদান করা বাংলাদেশ সরকারের ও দেশের মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার, সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠনের কাছে আর্থিক ও অন্যান্যভাবে যথাযথ সহায়তা প্রদানের জন্য দেশের নাগরিক ও আন্তর্জাতিক মহলকে আহবান জানাচ্ছি। দেশে শরণার্থীরা অবস্থানকালে তাঁদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও সার্বিক কল্যানার্থে, এবং বাংলাদেশের ও তাঁর নাগরিকগণের কল্যানার্থে, নিশ্চিত করা প্রয়োজন যে শরণার্থীরা কেবল নির্দিষ্ট শরণার্থী শিবিরেই বসবাস করেন।


তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের শরণার্থীদের প্রতি তাঁদের স্বদেশে অত্যাচার ও বাংলাদেশে তাঁদের আগমনকে ঘিরে নানা প্রচার, অপ-প্রচার, গুজব এবং সীমিত পর্যায়ের হিংসাত্মক ঘটনার কথা আমরা জানতে পেরেছি। চট্টগ্রাম, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কর্মরত বা বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের একাধিক পাহাড়ি ব্যক্তি তাঁদের জাতিগত বা ধর্মগত পরিচয়ের কারনে কটাক্ষ উক্তি, হুমকি এবং হিংসাত্মক ও অন্যান্যভাবে অনাকাংখিত আচরণের শিকার হয়েছেন মর্মে আমরা জেনেছি, এটা সংশয়ের বিষয়। এবং আমরা এ ব্যাপারে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

 

যেহেতু মিনায়মারের সংখ্যা-গুরু সম্প্রদায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং শরণার্থীদের সিংহভাগ মুসলিম ধর্মাবলম্বী, বিষয়টাকে অহেতুকভাবে ধর্মগত সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে কোন কোন মহল থেকে অপব্যাখ্যা প্রদান করা হচ্ছে। এসবের অসংযত বহিঃপ্রকাশের ফলে সাম্প্রদায়িকতা বেড়ে যাচ্ছে, এবং অহেতুকভাবে দেশের বৌদ্ধদেরকে রাখাইন রাজ্যের নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। মায়ানমার সরকারের হাতে বিশেষ করে সামরিক শাসনামলে, নিপীড়নের শিকার হয়েছে শুধু অ-বৌদ্ধ সম্প্রদায় নয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগুরু বামার সম্প্রদায়, এবং শ্যান, রাখাইন, মোন, ক্যারেনসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর নারীও অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।


তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে ‘রোহিঙ্গা’ নামে পরিচিত জনগোষ্ঠীর একটি অংশ মিয়ানমারে সশস্ত্র কার্যক্রমে জড়িত মর্মে নির্ভরযোগ্য খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের কার্যকলাপের কারনে, অন্তত: আংশিকভাবে, নিরীহ ও সংঘাতের সাথে যুক্ত নয় এমন অনেকেই মিনায়নমার সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অত্যাচারের শিকার হয়েছেন ও হচ্ছেন। এসব সশস্ত্র দলের হাতে বর্মীয় বৌদ্ধ দইনাক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আক্রমণের শিকার হয়েছে মর্মে সংবাদ পাওয়া গেছে (যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও তংচংগ্যা, এবং কক্সবাজার জেলার দইনাক-দের সাথে, ঐতিহাসিকভাবে জাতিগত ভিত্তিতে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বলা যায় এবং যাদের মধ্যে চলমান সামাজিক সম্পর্ক চলমান রয়েছে)। বাংলাদেশ সরকারের সজাগ থাকতে হবে যাতে “রোহিঙ্গা”-দের কোন অংশের কোন রকমের সশস্ত্র ও অন্যান্য হিংসাত্মক কার্যকলাপ বাংলাদেশে বা বার্মার মাটিতে সংঘটিত না হয়।


চাকমার রাজার একান্ত সচিবের প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত তুলে গেল---

পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা সার্কেলের পক্ষে
চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়ের
“রোহিঙ্গা ইস্যু” সম্পর্কে প্রেস বিজ্ঞপ্তি
রাজবাড়ী, রাঙামাটি, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭।


সাম্প্রতিক কালে মায়ানমার বা বার্মার রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশুর মর্মান্তিক অবস্থায় আগমনে চাকমা সার্কেলের অধিবাসীগণ গভীরভাবে উদ্বিঘ্ন।মৌলিকভাবে, এ বিষয়ে, আমরা বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের সাথে সহমত পোষণ করি। সংখ্যালঘু রাখাইন রাজ্যবাসীর প্রতি বার্মার সরকারের বৈষম্যমূলক, হিংসাত্মক এবং মানবাধিকার-বিরোধী ও মানবতা-বিরোধী কর্মকা-কে তীব্র নিন্দা জানাই।

 

এই শরণার্থীদেরকে যথা শিঘ্রি সম্ভব তাঁদের স্বস্ব গ্রামে, সন্মানজনকভাবে, নিরাপদভাবে ও যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান সাপেক্ষে প্রত্যাবর্তনের উদ্দ্যেশ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সদাশয় সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

 

তবে, যতদিন পর্যন্ত তা সম্ভবপর না হয়, তাঁদেরকে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে যথাযথ আশ্রয় প্রদান করা বাংলাদেশ সরকারের ও দেশের মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার, সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠনের কাছে পর্যাপ্ত আর্থিক ও অন্যান্যভাবে যথাযথ সহায়তা প্রদানের জন্য দেশের নাগরিক ও আন্তর্জাতিক মহলকে আহবান জানাচ্ছি।

 

দেশে শরণার্থীরা অবস্থানকালে তাঁদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও সার্বিক কল্যানার্থে, এবং বাংলাদেশের ও তাঁর নাগরিকগণের কল্যানার্থে, নিশ্চিত করা প্রয়োজন যে শরণার্থীরা কেবল নির্দিষ্ট শরণার্থী শিবিরেই বসবাস করেন।

 

দেশের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যের শরণার্থীদের প্রতি তাঁদের স্বদেশে অত্যাচার ও বাংলাদেশে তাঁদের আগমনকে ঘিরে নানা প্রচার, অপ-প্রচার, গুজব এবং সীমিত পর্যায়ের হিংসাত্মক ঘটনা বা সে রকম ঘটনার উসকানির কথা আমরা জানতে পেরেছি। চট্টগ্রাম, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কর্মরত বা বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের একাধিক পাহাড়ি ব্যক্তি তাঁদের জাতিগত বা ধর্মগত পরিচয়ের কারনে কটাক্ষ উক্তি, হুমকি এবং হিংসাত্মক ও অন্যান্যভাবে অনাকাংখিত আচরণের শিকার হয়েছেন মর্মে আমরা জেনেছি, এটা সংশয়ের বিষয়। এবং আমরা এ ব্যাপারে তীব্র নিন্দা জানাই।

যেহেতু বার্মার সংখ্যা-গুরু সম্প্রদায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, এবং শরণার্থীদের সিংহভাগ মুসলিম ধর্মাবলম্বী, বিষয়টাকে অহেতুকভাবে ধর্মগত সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে কোন কোন মহল থেকে অপব্যাখ্যা প্রদান করা হচ্ছে। এসবের অসংযত বহিঃপ্রকাশের ফলে সাম্প্রদায়িকতা বেড়ে যাচ্ছে, এবং অহেতুকভাবে দেশের বৌদ্ধদেরকে রাখাইন রাজ্যের মুসলমানদের নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

 

তবে বাস্তবে দেখা যায় যে, মায়ানমার সরকারের হাতে, বিশেষ করে সামরিক শাসনামলে, নিপীড়নের শিকার হয়েছে শুধু অ-বৌদ্ধ সম্প্রদায় নয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগুরু বামার সম্প্রদায়, এবং শ্যান, রাখাইন, মোন, ক্যারেনসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর নারী ও অগণিত ক্ষেত্রে অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

 

এছাড়া, ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায় যে বার্মা থেকে ভারতীয় ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক কর্মকা-ের ফলে হাজার হাজার মুসলিম, হিন্দু, শিখ ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ (বিশেষ করে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের) বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন, অন্যান্যের মধ্যে, ১৯৩০, ১৯৪৪-৪৫ ও ১৯৬২ সনে।

 

বার্মা-বাংলাদেশ সীমান্তে, আন্তর্জাতিক সীমান্তের উভয় পাশে, দীর্ঘকাল ধরে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। এসব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে জাতিগত, ভাষাগত ও কৃষ্টিগত ঐতিহ্য একই ধারায় গাঁথা। অন্যতম হোলঃ (১) ‘রহিঙ্গা’ ও চাটগাঁইয়া ভাষাভাষী বাঙালি; (২) মারমা ও রাখাইন; (৩) চাকমা, তংচংগ্যা ও দৈনাক; (৪) বম, লুশাই ও চীন; (৫) খুমি, ম্রো, প্রভৃতি। নিকটবর্তী ভারতীয় সীমান্তের ওপারেও এ সকল অনেক জাতিগোষ্ঠীর বা তাঁদের গোত্রগত আত্মীয়দের বসবাস রয়েছে।

 

মানবাধিকারের দৃষ্টিতে, আন্তঃরাষ্ট্রীয় শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে, এবং বাণিজ্যের কারনে সীমান্তের উভয় দিকে বসবাসকারী জাতিগোষ্ঠী সমূহের সৎভাব বজায় রাখা অপরিহার্য। একই কারনে বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিকদের, বাঙালি, পাহাড়ি ও অন্যান্য আদিবাসী, মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্ম বা আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী সম্প্রদায়গুলোর মধ্যেও সৎভাব বজায় রাখতে হবে।

 

বাংলাদেশে ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে ‘রোহিঙ্গা’ নামে পরিচিত এবং বার্মায় ‘বাঙালি’ বা ‘কোলা’ নামে পরিচিত জনগোষ্ঠীর একটি অংশ বার্মাতে সশস্ত্র কার্যক্রমে জড়িত মর্মে নির্ভরযোগ্য খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের কার্যকলাপের কারনে, অন্তত: আংশিকভাবে, নিরীহ ও সংঘাতের সাথে যুক্ত নয় এমন অনেকেই বার্মার সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অত্যাচারের শিকার হয়েছেন ও হচ্ছেন। এসব সশস্ত্র দলের হাতে বর্মীয় বৌদ্ধ দইনাক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আক্রমণের শিকার হয়েছে মর্মে সংবাদ পাওয়া গেছে (যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও তংচংগ্যা, এবং কক্সবাজার জেলার দৈনাক-দের সাথে, ঐতিহাসিকভাবে জাতিগত ভিত্তিতে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বলা যায় এবং যাদের মধ্যে চলমান সামাজিক সম্পর্ক চলমান রয়েছে)।

 

বাংলাদেশ সরকারের সজাগ থাকতে হবে যাতে “রোহিঙ্গা”-দের কোন অংশের কোন রকমের সশস্ত্র ও অন্যান্য হিংসাত্মক কার্যকলাপ বাংলাদেশে বা বার্মার মাটিতে সংঘটিত না হয়।

 

আমি নিম্নলিখিতি বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক বিশেষ আহবান জানাচ্ছিঃ


১। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে যথাযথ পরিবেশ আনয়ন সাপেক্ষে বর্মী শরণার্থীদের তাঁদের স্বস্ব এলাকায় সন্মানজনক ও গ্রহণযোগ্য প্রত্যাবর্তনের ব্যাবস্থা করা।

 

২। স্বদেশে প্রত্যাবতন না হওয়া পর্যন্ত শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পর্যাপ্ত শিবির প্রতিষ্ঠা, এবং শিবির-বাসীর জন্য খাদ্য ও পুষ্টি-নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক সুযোগ প্রদান করা। এতে আন্তর্জাতিক দাতা-সংস্থা, জাতিসংঘের সংস্থা ও এনজিও-দের আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা ও ভূমিকা থাকা উচিৎ। তবে শিবিরের স্থান বাছায়ে যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষতি সাধিত না হয় তাও নিশ্চিত করা উচিৎ (কক্সবাজার জেলার দৈনাক-অধ্যুষিত একটি এলাকায় শিবির স্থাপনের উদ্যোগে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানিয়েছে)।

 

৩। বাংলাদেশে বসবাসরত ‘রহিঙ্গা’ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত সংগঠন বা ব্যক্তিদের সশস্ত্র সংঘাত সম্পর্কিত কার্যকলাপ যাতে বাংলাদেশে বা বার্মায়, হতে না পারে, সরকার কর্তৃক তার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া (রিক্রুটমেন্ট, প্রশিক্ষণ, অর্থ যোগান, প্রচার, কমুনিকেশন ইত্যাদি সহ)।

 

৪। সরকার, পুলিশ বাহিনী ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দেশের বিভিন্ন এলাকাতে বসবাসকারী বা সফররত পাহাড়ি বা আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বাংলাদেশী ব্যক্তিদের (বিশেষ করে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার রপ্তানি কারখানায় কর্মরত পাহাড়ি ব্যক্তিদের) জীবন, দেহ ও সম্পত্তির নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা।

 

৫। প্রচার মাধ্যম, রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় নেতা, গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজ কর্তৃক বার্মার রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতকে বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ মর্মে অপব্যাখ্যাকে প্রতিহত করা।

 

৬। ফেসবুকেসহ ইন্টারনেট, পত্র পত্রিকা, সভা, সম্মেলন, সমাবেশ, মাইকিং, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও অন্যান্য প্রকাশনার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদানকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা (যা আইনগতভাবে দন্ডনীয় অপরাধ)  এবং

 

৭। সীমান্ত এলাকায় শরণার্থী শিবিরে যথাযথ সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শরণার্থীদের পার্বত্য চট্টগ্রামসহ শরণার্থী শিবিরের বাইরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিবাসন না হওয়ার ব্যাপারে সরকার কর্তৃক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
এই বিভাগের সর্বশেষ
আর্কাইভ