সমাজে নারীর সমধিকার প্রতিষ্ঠাকল্পে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে জোরদারের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দীর্ঘ দুই যুগেও মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হয়নি। চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায়র কারণে পাহাড়ী নারীরা অনিরাপত্তাহীনতায় ও নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তাই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে নারী-পুরুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার রাঙামাটিতে আর্ন্তজাতিক নারী দিবস ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ৩৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য মহিলা সমিতির উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য গৌতম কুমার চাকমা। পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মনি চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ আলোচক ছিলেন পার্বত্য নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে দেন নারী নেত্রী এ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, বিশিষ্ট নারী সাংবাদিক সুমি খান, ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম জেলা সংসদের নেতা ইমরান চৌধুরী, আদিবাসী ফোরামের পার্বত্যাঞ্চল শাখার সাধারন সম্পাদক ইন্টু মনি তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাগর ত্রিপুরা নান্টু, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক নিপুণ ত্রিপুরা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন পার্বত্য মহিলা সমিতির জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ম্রানু চিং মারমা। এর আগে একটি বর্নাঢ্য র্যলী জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বর থেকে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয় সামনে গিয়ে পুনরায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনাতন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এসময় নানান দাবী সম্বলিত ফেস্টুন প্লেকার্ড নিয়ে নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও অংশ নেন।
বিশেষ বক্তার বক্তব্যে গৌতম দেওয়ান বলেন, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে সংগ্রাম করেছি সেখানে অবশ্যই নারী-পুরুষের সম্মিলিত পার্বত্য জনগণ সংগ্রাম করেছে। তাই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি হয়েছে দুই যুগ হলো। কিন্তু দুখের বিষয় চুক্তি বাস্তবায়নের দাবীর কথা বলতে হয়। ৮ থেকে ১০ বছর হচ্ছে ৭২ধারা, ৩৩টি বিভাগের মধ্যে ৪৮টি ধারা বাস্তবায়নের কথা বলছে সরকার। এখানে গাণিতিকভাবে বলার বিষয় নয়। চুক্তি মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হয় তাহলে চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে দেখিয়ে লাভ কি? হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ কি?
তিনি চুক্তিতে প্রস্তবানার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল এবং বেশিষ্ট্য সংরক্ষন করতে হবে। এই বৈশিষ্ট্যর জন্য আজকে টাস্কফোর্স, ভূমি কমিশন ও চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি করা হয়েছে। টাস্কফোেের্সর কাজ হচ্ছে পরিস্থিতির কারণে যারা দেশ ত্যাগ করেছে আবার আলোচনার মাধ্যমে দেশে ফিরে এসেছে তাদের এবং অভ্যন্তরীণভাবে ৮৪ হাজার পরিবার উদ্ধাস্তু হয়েছে তাদের পূর্নবাসন করা হয়নি। ভূমি কমিশন গঠন করা হয়েছে অথচ ২২ বছরেও কমিশনের বিধিমালা প্রনয়ন হয়নি। চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি হয়েছে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ করে প্রধান করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন কমিটির কোন কার্যকলাপ চোখে পড়ছে না।
তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, দুই যুগ ধরে আন্দোলনের যে ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞা রয়েছে তার কাজে লাগিয়ে সন্মিলিত ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে পারি তাহলে অবশ্যই আধিকার আদায় করা সম্ভব হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.