• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
বিলাইছড়িতে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে হিল ফ্লাওয়ারের কুইজ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা                    পরিবেশ রক্ষায় বরকলে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের ৭২০০ গাছ রোপণ                    বরকলে ছোট হরিণা জোনের উদ্যোগে সহায়তা প্রদান                    হিজাছড়ি আর্যরত্ন বন বিহারে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত                    ধর্ম্মোদয় বৌদ্ধ বিহারে ৪০তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত                    জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করারসহ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবী                    নানিয়ারচরে সেনা অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ দুই ইউপিডিএফ সদস্য আটক                    পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতি সৌহার্দ্যপূর্ন সম্পর্ক ও উন্নয়ন চাই-পার্বত্য উপদেষ্টা                    সম্প্রীতির বন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সাথে থাকতে চাই-পার্বত্য উপদেষ্টা                    সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে মানববন্ধন                    রাঙামাটিতে কঠিন চীবর দানোৎসবে নিরাপত্তায় থাকবে আইন-শৃংখলা সেনাবাহিনী                    নানিয়ারচরে নৌকা ডুবিতে নিখোজ দুই কলেজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার                    লংগদুতে ঝড়ে নৌকা ডুবে মা ও দু্ই ছেলের মৃত্যু                    বিলাইছড়িতে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করলেন জোন কমান্ডার                    ইউপিডিএফের অস্ত্রধারীদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে-ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক                    খাগড়াছড়ির সহিংসতা ঘটনায় রাঙামাটির এনসিপির নিন্দা ও প্রতিবাদ                    গুইমারায় নিহত ৩জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর,১৪৪ ধারা বলবৎ                    রাঙামাটিতে রাজনৈতিক,ধর্মীয়,সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়                    খাগড়াছড়ির উদ্ভূতপরিস্থিতি মোকাবেলায় পাহাড়ি-বাঙ্গালীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান-পার্বত্য উপদেষ্টা                    পাহাড়ে ফুটবলে বড় আসর ড.রামেন্দু শেখর দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন                    শুক্রবার পর্দা উঠছে ড.রামেন্দু শেখর দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট                    
 
ads

বিলাইছড়িতে তামাকের বদলে চাষ হচ্ছে শিম-বাদাম

অসীম চাকমা, ফারুয়া থেকে ফিরে : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 04 Jan 2025   Saturday

রাঙামাটির বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নে তামাকের বদলে চাষ হচ্ছে শিম আর বাদাম চাষ। প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বানিজ্যিকভাবে করা হয়েছে শিম চাষ। এছাড়া বাদামসহ বিভিন্ন জাতের সবজীও চাষও করা হয়েছে।  এর মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার সদর ইউনিয়ন ও বাকী অংশ র‌্যাইখ্যাং নদীর দুই পাড়ে ৫০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এ চাষ করা হয়েছে।  ফারুয়া এলাকায় এখন সবুজে সবুজে সমারোহ ভরে উঠেছে। 
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি বছরের মত এ বছরও বিলাইছড়িতে বিশেষ করে ফারুয়া ইউনিয়নে শিম-বাদামসহ বিভিন্ন সবজি বানিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় র‌্যাইখ্যাং নদীর দুই পাড়ে শিম চাষের ফলে গড়ে উঠেছে সবুজের সমারোহ। সারি সারি বাঁশের খুঁটি ‘গিল’ (যেখানে শিমের লতাটা বেয়ে উঠে শিম ধরে) হিসেবে দেওয়া হয়।  রাইংখ্যাং নদী যেভাবে এঁকে বেঁকে চলে গেছে, ঠিক সেভাবে দুই পাড়ে বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে চাষ করা শিমের সবুজের সমারোহও বয়ে গেছে।
 
ইতোমধ্যে ফরাস শিম তোলা হচ্ছে। এসব শিম মন প্রতি ৩ হাজার বা তারও অধিক বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশীয় শিমের ফুলও আসা শুরু করেছে। মাসখানেকের পরে ফসল তোলা যাবে। শিমছাড়াও সমন্বিতভাবে চিনাবাদাম, ফরাস সীম, ভূট্টা ও নানা ধরনের সবজী চাষ করা হয়েছে। 
 
এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়. প্রায় এক যুগ আগেও তামাকের চাষ করা হতো এ ফারুয়া ইউনিয়নে। তবে তামাক কোম্পানী থেকে অগ্রীম টাকা নেওয়ার কারণে উত্তোলনের পর সেই কোম্পানীকে দিতে হত। যার কারণে জমিতো ক্ষতি হতো এবং কৃষকরাও আর্থিকভাবে কিছুটা কম লাভবান হতো। তাই প্রশাসনসহ বিভিন্ন সচেতন মহলের প্রচেষ্ঠায় তামাক চাষে যে ক্ষতি হয়, সেটা তারা বুঝতে পেরে আস্তে আস্তে অন্য কিছু করার পরিকল্পনা করে।  বর্তমানে তারা শিম, বাদামসহ বিভিন্ন জাতের  শাক-সবজী বানিজ্যিকভাবে চাষ করছে। তারা এখন আগের থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে এবং সেই টাকা দিয়ে পরিবারের ভরণ পোষনের পাশাপাশি কেউ কেউ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন। 
 
বিলাইছড়ি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান মৌসুমে বিলাইছড়িতে প্রায় ৭৫ হেক্টর শীম, ৬৫ হেক্টর চিনাবাদাম, ৩০ হেক্টর ফরাস শীম , ২৬ হেক্টর ভূট্টা  ও অন্যান্য সবজী ২২৬ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
গোয়াইনছড়ি পাড়ার শিম চাষী বিশ্বান্ত তঞ্চঙ্গ্যা জানান, এ বছর রাইংখ্যাং নদীর পাড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে শিম চাষ করেছেন। বর্ষার মৌসুমে জমিগুলোতে পলি জমার কারণে জমি অনেকটা উর্বর থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিনও রোগের আক্রমন থেকে বাঁচতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে তিনি ভালো ফলনের আশা করেছেন। 
 
তক্তানালা গ্রামের রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তিনি এ বছর প্রায় ৩ একরের বেশি জমিতে এই শিম চাষ করেছেন।  ঠিকমত পরিচর্যা করতে পারলে এবং প্রয়োজন মত কীটনাশক দিলে পারলে ভালো ফলন পাওয়া  যাবে। তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে  গেল বছরের চাইতে ভালো ফলন পাওয়ার আশা  রয়েছে।  তিনি আরও জানান,, তার দুই ছেলের মধ্যে একজন তার সাথে কাজ করে। অন্য ছেলে রাঙামাটিতে পড়াশোনা করে।  ছেলের পড়াশোনার খরচ তিনি এ শিম চাষ করে যোগান দিয়ে থাকেন।
 
গোয়াইনছড়ি পাড়ার হেডম্যান বিমল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তার এলাকায় প্রায় ১০০ পরিবারের মত এ শিম এবং বাদাম চাষ করেছেন। তিনি নিজেও প্রায় ২ একরের মত জায়গায় শিম চাষ করেছেন।  মনপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার পর্যন্ত শিম  বিক্রয় করা হয়।
 
ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ফারুয়া এলাকা একটি কৃষি নির্ভর ইউনিয়ন। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এক সময় এখানে প্রচুর তামাক চাষ হতো।  তামাক কোম্পানিগুলো কৃষকদেরকে  বিনা সূদে ঋণ দিয়ে তামাক চাষ করাতো। প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আর এখানে তামাক চাষ হচ্ছে না। বর্তমানে এখানে শিম এবং চিনা বাদাম প্রচুর চাষ হচ্ছে।
 
তিনি আরো বলেন, এ ইউনিয়নে বিশেষ করে ১,২,৩,৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ব্যাপকহারে এ শিম ও বাদামের চাষ করা হয়। পাশাপাশি অন্যান্য শাক- সবজীরও চাষ করা হয়। তিনি বলেন, এক- থেকে দেড় মাস পরই শিমের ফলন আসা শুরু করবে। এখনো পর্যন্ত শিমের ফলন ভালো দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া যদি অনুকুলে থাকে এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ যদি না আসে তাহলে শিমের ফলন ভালো হবে। 
 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান খান জানান, বিলাইছড়ি উপজেলায় ১২ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৬ জন। তার মধ্যে ফারুয়া ইউনিয়নে ২ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দূর্গম এলাকা হিসেবে কম জনবল দিয়ে কাজ করা খুবই কঠিন। তারপরও সাধ্যমত মাঠে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে কাজ করতে হলে পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন।
 
রাঙামাটি কৃষি  সম্প্রসারণ অধিপ্তরের সদ্য বিদায়ী  অতিরিক্ত পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন,ফারুয়ার রেংখ্যং নদীর দুই পাশ  যখনবর্ষাকালে  পানিবৃদ্ধি পায় তখন প্রচুর পলি মাটি জমে। কৃসকরা পানি  কমে যাওয়ার সাথে সাথে  এসব চর বা  জেগে উঠা জমিতে শিম ও বাদাম ব্যাপকভাবে চাষ  থাকেন।  তাই এ শিম চাষ  ফরুয়া এলাকার জন্য বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।  এক সময় এ ইউনিয়নে ব্যাপক তামাক  চাষ করা হতো। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিম ও বাদাম চাষে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা রয়েছে। 
--হিলবিডি৪/সম্পাদনা/সিআর.
 

 

 

 

সংশ্লিষ্ট খবর:
ads
ads
এই বিভাগের সর্বশেষ
আর্কাইভ