• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
লংগদুতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মীসহ দুজন নিহত                    রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের আধাবেলা অবরোধ পালিত                    চার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জেএসএসের দুজন ও আঃলীগের দুজন প্রার্থী জয়ী                    রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত                    রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারনায় ব্যস্ত                    প্রশাসন ও বিচার বিভাগের পক্ষপাতমূলক আচরণে পার্বত্য মানবাধিকার পরিস্থিতিকে সংকটাপন্ন করবে                    রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত                    সাজেকে ট্রাক উল্টে খাদে নিহত ৯, আহত ৬                    বৃহস্পতিবারের ডাকা অর্ধ দিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ রাঙামাটি শহর আওতামুক্ত                    দ্রুত কমছে কাপ্তাই হ্রদের পানি,স্বাভাবিকের চেয়ে আট ফুট পানি কম                    বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে অর্ধ দিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ ডেকেছে ইউপিডিএফ                    কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার ২৮ বছর পর খারিজ                    পার্বত্যাঞ্চল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ১২জন ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা                    ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে বিজু,সাংগ্রাই, বৈসুক উৎসব শুরু                    বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু উপলক্ষে রাঙামাটিতে বর্নাঢ্য র‌্যালী                    বান্দরবানে ধরপাকড়,হয়রানির ঘটনায় উদ্বেগ ও আটকদের মুক্তির দাবি তিন সংগঠনের                    বিজু উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর আর্থিক সহায়তা                    রাঙামাটিতে জুম উৎসবের আয়োজন                    বন বিভাগের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সন্মেলন                    বিলাইছড়িতে আগুনে ৬টি বসতঘর পুড়েছে, আহত ১                    পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস কর্মসূচি পালন                    
 
ads

১২ এপ্রিল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু শুরু হচ্ছে

বিশেষ প্রতিবেদক : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 04 Apr 2015   Saturday

আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু শুরু হচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এই উৎসবকে ঘিরে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বসবাসরত আদিবাসী জনপদগুলোতে উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। আদিবাসীরা উৎসবটি পালনের জন্য এখন থেকে কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সাধারনত বাংলা বর্ষের শেষ দুদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব পালন করা হয়।

 

পার্বত্য চট্টগ্রামের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) এগার ভাষাভাষি চৌদ্দটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসী জাতিসত্তার বসবাস। এসব সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব হচ্ছে বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু। পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত আদিবাসীদের এ উৎসবটি উচ্চারনগতভাবে বিভিন্ন নামের পালন করলেও এর নিবেদন ও ধরন কিন্তু একই। তাই এ উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্যতম চাকমারা এ উৎসবকে বিজু, মারমারা সাংগ্রাই ও ত্রিপুরারা বৈইসুক নামে অভিহিত করে থাকেন। বর্তমানে এ উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল পাহাড়ী-বাঙালীসহ সকল সম্প্রদায়ের সার্বজনিন উৎসব হিসেবে পরিণত হয়েছে।


এদিকে, বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু উৎসবকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিউিট শনিবার থেকে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী পাচন রান্নার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিউিট প্রাঙ্গনে শনিবার বিকাল ৪টায় উদ্ধোধন করবেন রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার। এছাড়া আগামী ৭ এপ্রিল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন জুম ঈসথেটিকস কাউন্সিলের(জাক) উদ্যোগে তিন ব্যাপী আদিবাসী মেলা শুরু হবে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিউিট প্রাঙ্গনে আদিবাসী মেলার উদ্ধোধন করবেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী রেভা. এল. ডলিয়েন বম। প্রধান অতিথি থাকবেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মংসানু চৌধুরী। 


অপরদিকে বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিহু উদযাপন কমিটি রাঙামাটির উদ্যোগে ১০ এপ্রিল থেকে তিন দিনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১০ এপ্রিল সকালে বনার্ঢ্য র‌্যালী, বিকালে রাঙামাটি স্টেডিয়ামে শিশু চিত্রাংকন প্রতিযেগিতা। র‌্যালীর উদ্ধোধন করবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয়(সন্তু লারমা), প্রধান অতিথি থাকবেন রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার। ১১ এপ্রিল আদিবাসী জুম্ম খেলা, বয়োজ্যেষ্ঠদের সন্মাননা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১২ এপ্রিল রাজ বন বিহার ঘাটেভোর সাড়ে ৬টায় ঐতিহ্যবাহী ফুল ভাসানো, বিকালে রাঙামাটি স্টেডিয়ামে বলি খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এছাড়া বিভিন্ন সম্প্রদায়, সংগঠন ও ক্লাবের পক্ষ থেকে এ উৎসবকে কেন্দ্র করে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে বলে জানা গেছে।


পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত আদিবাসীদের এই উৎসবটি উচ্চারনগতভাবে বিভিন্ন নামের পালন করলেও এর নিবেদন ও ধরন কিন্তু একই। চাকমা সম্প্রদায় তিন ব্যাপী উৎসবের প্রথম দিনকে ফূল বিজু, দ্বিতীয় দিনকে মূল বিজু এবং তৃতীয় দিনকে গজ্যাপজ্যা বিজু বলে থাকে।


উৎসবের প্রথম দিন হচ্ছে ফূল বিজুঃ- এদিনে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে আদিবাসী পাহাড়ি মেয়েরা ঘরবাড়ি ও বাড়ির অঙিনা পরিস্কার করে ও অবাল বৃদ্ধবনিতা হতে সবাই নদীতে স্নান করে জল দেবের উদ্দেশ্য ফূল দিয়ে পূজা করে থাকে। এছাড়া, ছোট্ ছোট্ ছেলে-মেয়েরা ঘুম থেকে উঠে বনফূল সংগ্রহ করে বাড়ি সাজায় ও তরুন-তরুনীরা পাড়ায় পাহাড় বৃদ্ধদের শ্রদ্ধার সাথে স্না করায়। দিনভর আয়োজন করা হয় আদিবাসীদের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এদিন আদিবাসী বৌদ্ধরা বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা, সন্ধ্যায় নদীর ঘাটে ও বাড়ির অঙিনা প্রদীপ প্রজ্জলন করে থাকেন। তবে আজকাল যুগের পরির্বতনের কারণে ঐতিহ্যবাহী অনেক রীতিনীতি হারিয়ে যেতে বসেছে।


উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজুঃ- এ দিনে আদিবাসীদের বাড়িতে বাড়িতে শুধূ চলবে শুধু খাওয়া-দাওয়ার পর্ব ও আনন্দ করার পর্ব। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা নতুন নতুন জামাকাপড় পড়ে থাকে। এদিনে বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু খাবার-দাবার আগত অতিথিদের পরিবেশন করা হয়। সুস্বাদু খাবারের মধ্যে পাচনসহ(প্রায় ৩০ প্রকারের অধিক সব্জি) বিভিন্ন অন্যান্য রকমারী খাবার। এদিন ধনী-গরীব সবাইয়ের জন্য দ্বার উন্মুক্ত থাকে। মূল বিজুর দিনে আদিবাসী পাহাড়িদের তৈরী মদ এক ছোনী-দোছোনী আগত অতিথিদের পরিবেশন করা হয়। মূল বিজুর দিনটি মূলত অন্যরকম একটি দিন। যা শুধু খাওয়া-দাওয়া আর আনন্দ উল্লাসের মধ্যে মেতে থাকার দিন।


উৎসবের শেষ দিন গজ্যাপজ্যা বিজুঃ- এ দিনে আদিবাসী পাহাড়িরা সারাদিন ঘরে বসে বিশ্রাম নিয়ে থাকে। এ দিন বৌদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনা ও বয়োজ্যেষ্ঠদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসে যত্নসহকারে ভাত খাওয়ানোসহ আর্শীবাদ নেয়া হয়। এদিনটিকে আদিবাসীরা মনে করে থাকে সারাদিন আনন্দ আর হাসি-খূশিতে কাটাতে পারলে সারা বছর সূখে শান্তিতে ও ধন-ধৌলতে কেটে যাবে। এ দিন তারা যে কোন প্রাণী হত্যা করা থেকে বিরত থাকেন। অন্যদিকে আদিবাসী মারমা সম্প্রদায়রা এদিনে ঐতিহ্যবাহী পানি খেলার আয়োজন করে থাকে। তারা পানি খেলার মাধ্যমে পূরনো বছরের সমস্ত গ্লানি ও দূঃখ কষ্টকে দূর করে নতুন বছরকে বরণ করে থাকেন।


এদিকে উৎসবকে ঘিরে আদিবাসী পল্লীগুলোতে উৎসবের প্রস্ততি। ইতোমধ্যে উঃসবের দিনে পরিবেশনের জন্য খাবার-দাবারের কেনাকাটা নতুন জামা-কাপড়ের কেনা কাটার ধুম পড়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
এই বিভাগের সর্বশেষ
আর্কাইভ