কাপ্তাই হ্রদে সুষ্ঠুভাবে নৌ চলাচলের স্বার্থে বিভিন্ন প্রশাসনের সমন্বয়ে ছয়টি নৌপথে পরিকল্পিতভাবে খননের দাবীতে সোমবার সংবাদ সন্মেলন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল(যাত্রী পরিবহণ) সংস্থা রাঙামাটি জোন।
শহরের রিজার্ভবাজারস্থ সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার রাঙামাটি জোনের সভাপতি মঈন উদ্দীন সেলিম। এসময় সংস্থাটির সাবেক সাধারন সম্পাদক নিজাম উদ্দীন, নির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দীন, মোঃ ইউনুস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, কাপ্তাই হ্রদে বিগত সময়ে বিভিন্ন সংস্থা বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন উপজেলায় খননকাজ করলেও সেই সুফল রাঙামাটিবাসী পায়নি। পরিকল্পিতভাবে খনন করার ফলে নৌ-পথগুলি দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কোন সময় কোন সংস্থায় এ খননকাজ করেছে জেলাবাসী ও প্রশাসন জানে না। এসব সব খনন কাজ সরাসরি ঢাকা থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে করার ফলে নৌপথে কোন সুফল মিলছে না। ইতোপূর্বে শুভলং এ ৯ নং ও ১০ নং টিলা এলাকায় নৌপথ খনন না কওে বিল ও টিলা কাটা হয়েছিল। জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও জেলা প্রশাসক বরকল উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত কওে ব্যস্থা নিতে বলায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ কওে চলে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে খননে হ্রদ ভরাট হওয়ার কারণে যে পরিমান পানি থাকার কথা সেই পরিমান হ্রদে পানি না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহতসহ মৎস ভান্ডার বিলুপ্ত হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করা হলে ভবিষ্যতে কাপ্তাই হ্রদে নৌ-চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ও পানির অভাবে একদিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রও বন্ধ হওয়ার সম্ভবানা রয়েছে।
সংবাদ সন্মেলনে আরো বলা হয়, জেলার অন্তর্গত ৬ টি উপজেলায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌ-পথকে সচল রাখতে কাপ্তাই হ্রদের খাল খনন জরুরী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটি শহর থেকে মারিশ্যা পর্যন্ত নৌপথে খন্ড খন্ড জায়গাতে ২৫ কিলোমিটার, জুরাছড়ি ও ছোট হরিণা নৌপথের বিভিন্ন স্থানে ৪০ কিলোমিটার, রাঙামাটি শহর থেকে বিলাইছড়ির ১৫ কিলোমিটার, রাঙামাটি শহর থেকে নানিয়াররচরের ১৫ (পনের) কিলোমিটার নৌপথ খনন করিলে সারা বছর নৌ চলাচল করতে পারবে।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে মাইনিমুখ থেকে মেরুং খাল খনন করা হচ্ছে। ফলে খননের পলিমাটিগুলো মুল নদীতে অর্থাৎ নৌপথে গিয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যদি এ খনন কাজগুলো বিআইডব্লিইটিএ, জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সমন্বয়ে করা হলে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পলিমাটিগুলি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করা যাতো ।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার রাঙামাটি জোনের সভাপতি মঈন উদ্দীন সেলিম বলেন, কাপ্তাই হ্রদের উপর রাঙামাটির ৫ লাখ মানুষের ভাগ্য নির্ভর করে। তাই হ্রদে খনন বা হ্রদের যে কোন উন্নয়নে প্রসাশনের সমন্বয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন সময়ে এসব দাবী করে এসেছি। এসব দাবীতে শীঘ্রই জেলা প্রশাসকের সাথে অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার রাঙামাটি জোনের নেতৃবৃন্দ দেখা করবে। যদি এসব দাবী পূরণ না হয় তাহলে শ্রমিক, নৌরুটের পণ্য ব্যবসায়ী, পর্যটক পরিবহন সমিতি রয়েছে তাদেরকে নিয়ে সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা দেওয়া হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.