সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবীতে রোববার রাঙামাটিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা।

রোববার দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহর মাধ্যমে  দেওয়া স্মারকলিপি প্রদানকালে  উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এসোসিয়েশনের রাঙামাটি শাখার সভাপতি ও কাপ্তাই উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার আচার্য্য,  বরকল উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জগদীশ চাকমা,  নানিয়াচর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপসি চাকমাহ অন্যান্য উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাংগঠনিক কাঠামোভুক্ত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ইউএপিইও) পদটি ১৯৭৮ সালে সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে সংশোধিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী পদটি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হলেও ওই সময়ের অধস্তন প্রধান শিক্ষক পদটি ১৭তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষক পদটি ১৮তম গ্রেডে ছিল। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক পদটি কয়েক দফায় উন্নীত করার ফলে ২০১৪ সালে ১১তম গ্রেড এবং সম্প্রতি উচ্চতর আদালতের রায়ে ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষক পদটি চার দফায় উন্নীত হয়ে ২০২০ সালে ১৩তম গ্রেডভুক্ত হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ইউএপিইও পদটি ১০ম গ্রেডেই অপরিবর্তিত রয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, বর্তমানে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অনুমোদিত পদ সংখ্যা ২৬০৭ টি এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদসংখ্যা ৫১৬ টি। উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ সংখ্যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদ সংখ্যার পাঁচগুণেরও বেশি। নিয়োগবিধি অনুযায়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদের ৫০শতাংশ হিসেবে ২৫৮টি পদে প্রতি ১০ জনে ১ জন ইউএপিইও পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে। ফলে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা দীর্ঘ ২০ থেকে ২৫ বছর যাবৎ একই পদে চাকুরী করছেন। এমনকি অধিকাংশ কর্মকর্তা একই পদে থেকে অবসরেও যাচ্ছেন। ফলে তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টিসহ কর্মস্পৃহা হ্রাস পাচ্ছে। পাশাপশি এ পদে পদমর্যাদা বৃদ্ধি করা হলে পদোন্নতির প্রত্যাশা অনেকাংশে পূরণ হবে ও কর্ম উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ মার্চ সিভিল রিভিউ পিটিশন খারিজ হয় এবং মূল মামলার রিট পিটিশনের রায় বহাল থাকে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি ৯মার্চ ২০১৪ সাল থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের চুড়ান্ত রায় প্রদান করা হয়। ফলে ইউএপিইও, প্রধান শিক্ষক একই গ্রেড হওয়াতে তাদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হিসেবে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এসোসিয়েশনের রাঙামাটি শাখার সভাপতি আশীষ কুমার আচার্য্য বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রেড নিয়ে বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। যেখানে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ করার কথা থাকলেও তা করা যাচ্ছে না এ গ্রেড কাঠামোর ফলে। অবিলম্বে তাদের এ দাবী পুরণ না হলে পরবর্তী কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে জানান তিনি।

--সম্পাদনা/সিআর,