বৃহস্পতিবার বিলাইছড়িতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মামুনুল হক এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর বখতেয়ার হোসেন, বিলাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মানস বড়ুয়া, উপজেলা বিএনপি,র সভাপতি আব্দুস সালাম ফকির, সদর ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান প্রমূখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিরালা কান্তি চাকমা। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, অভিভাবক, ঐতিহ্যবাহী নেতৃবৃন্দ ও উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ব্যাগ ও পানির বোটল বিতরণ করেন। পরে জেলা প্রশাসক উপজেলার সরকারি সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্বরশাসক বলেন, শিক্ষা নিয়ে যত কথা আসুক, আমি সরকারের বিভিন্ন মহলে বলি যত পলিসি হয় অনেক গলদ রয়েছে। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূপ্রকৃতি, এখানকার মানুষের জীবনাচার ,প্রথা, ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে আমাকে প্ল্যান করতে হবে। আমরা যখন সরকারি কর্মকর্তারা কোথাও যোগদান করি, সেই এলাকাকে স্ট্যাডি করি। জেলা প্রশাসক পদায়ন হওয়ার পরে যদিও আমি এই জনপদের সন্তান তারপরও লিখিত যত ডুকুমেন্টস আছে সেটা পড়ার চেষ্টা করছিলাম। এই স্ট্যাডি করতে গিয়ে বিলাইছড়ি তথা রাঙামাটির বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দুটি সমস্যা আমার চোখে পড়েছে। সেদিন থেকে যোগদানের পর থেকে নয় মাস হলো আমরা লেগে আছি, চেষ্টা করছি, সেই চেষ্টা এবং প্রচেষ্টার বড় একটা অংশ জুড়ে আছে আপনাদের সুযোগ্য নির্বাহী অফিসার। সেও আমাদের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সেই দুটি বিষয় হচ্ছে এখানকার মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা। কর্মসংস্থান বেতিরিকে এখানকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব নয়। যেহেতৃ পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি কৃষির তেমন সুযোগ নেই, আর প্রথাগত কৃষি কাজে দারিদ্র্য বিমোচন যথাযথভাবে সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি পর্য়টনকে প্রমোট করার ।
জেলা প্রমাসক বলেন,যেহেতু রাঙামাটি পর্যটন জেলা এখানে সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তারা আসেন এবং বর্তমান সময়ে উপদেষ্টা স্যারেরা আসেন, তাদের সবাইকে আমি একটা কথা বলেছি এই এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। আমি এসে অবাক হলাম প্রাইমারী সেক্টরে এক হাজার শিক্ষকের পদ ফাকা। যেখানে শিক্ষক নেই, সেখানে কিসের মানসম্মত শিক্ষা। আমি দেখলাম, যেহেতু শিক্ষা ডিপার্টমেন্ট জেলা পরিষদে ন্যাস্ত। কারণ খুজতে গিয়ে দেখলাম, যে ছোট্ট একটি মামলা আছে। এই মামলার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে। আমি প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরে লিখলাম , তারা সেটি সিরিয়াসলি নিয়েছে। সেখান থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়েছে। এবং যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্য়ালয়ে গেলে সেটির ভার অনেক বেড়ে যায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান স্যার আপনার চিঠির কারণে মন্ত্রণালয় কাগজপত্র চাইছে। আপনাদের জন্য সুখবর হচ্ছে সেই মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই এই এক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হবে। আজকের যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক আপনাদের জন্য বড় সুসংবাদ এটি , আপনি কষ্ট করে নিজে না খেয়ে ,নিজের গায়ের জামা নেই , কিন্তু স্কুলগামী শিশুরা আমি দেখছি আপনারা সুন্দর সুন্দর জামা পরিধান করিয়ে স্কুলে পাঠাচ্ছেন সেখানে যদি শিক্ষার পরিবেশ না থাকে কেমনে করে বড় হবে।