রাঙামাটি সরকারী কলেজ ও কলেজের বাইরে সংগঠিত ঘটনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখতে রোববার জেলা প্রশানের উদ্যোগে এক জরুরী আইন-শৃংখলা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে রাঙামাটি সরকারী কলেজের সকল ধরনের রাজনৈতিক অপাতত স্থগিত ও জেলা প্রশাসনের পূর্বানুমোদন ছাড়া শহরে রাজনৈতিক মিছিল-সমাবেশ না করার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে, রাঙামাটি সরকারী কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি এবং পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্থ দোকানীদের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়,রাঙামাটি সরকারী কলেজ ক্যাম্পাস ও কলেজের বাইরে সংগঠিত ঘটনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্য রোববার জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে এক জরুরী আইন-শৃংখলা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন সন্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, রাঙামাটি সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ বাঞ্চিতা চাকমা, সেনা বাহিনীর প্রতিনিধি, মানবধিকার কমিশন সদস্য নিরুপা দেওয়ান, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, আওয়ামলীগের জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সভাপতি সুবর্ণ চাকমাসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে রাঙামাটি সরকারী কলেজের সকল ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড অপাতত স্থগিত রাখা ও জেলা প্রশাসনের পূর্বানুমোদন ছাড়া শহরে রাজনৈতিক মিছিল-সমাবেশ না করা, রাঙামাটি কলেজের বাইরে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনে সম্ভাব্যতা যাছাই, কলেজে সিসিটিভি ক্যামরা স্থাপন ও কলেজের সীমানা প্রচারী নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে ভবিষ্যতে কলেজে শিক্ষার্থীদের ইউনিফরম বাধ্যতামূলক করার বিষয়টির প্রতিও বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হয়।
অপরদিকে, রাঙামাটি সরকারী কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় রাঙামাটি কতোয়ালী থানায় শনিবার ও রোববার সকালে ৩টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি এবং পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্থ দোকানীদের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। রাঙামাটি কলেজের সংঘর্সষের ঘটনার এক দিন পরও রোববার শহরের গুরুত্বপুর্ণ স্থানে পুলিশের পাশাপাশি সেনা বাহিনী ও বিজিবি মোতোয়েন রাখা হয়েছে। রোববার রাঙামাটি সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে জেলা ছাত্রলীগ শহরের বিক্ষোভ-সমাবেশে করেছে।
শহরের হ্যাপী মোড় এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্যে রাখেন জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী,জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সূজন, সহ-সভাপতি সাহিদুল ইসলাম রাশেদ, সাধারন সম্পাদক প্রকাশ চাকমা, রাঙামাটি কলেজ শাখার সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাপ্পা।
নেতৃবৃন্দ বক্তারা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানান। এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল পৌর চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করে শহরের হ্যাপী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়া এ ঘটনার ক্ষতিগ্রস্থ দোকানীরা কলেজ গেইট এলাকায় মানবন্ধন করেছেন।
উল্লেখ্য, শনিবার রাঙামাটি সরকারী কলেজের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ ছাত্রলীগ ও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের(পিসিপি) মধ্যে সংঘর্ষে কতোয়ালী থানার ওসিসহ কমপক্ষে ১২ জন আহত হন। এসময় কলেজ ক্যাম্পাসে ২টি মোটর সাইকেল ও ক্যাম্পাসে বাইরে ১টি দোকানে অগ্নিসংযোগ এবং কয়েকটি দোকানে ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ ও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ পরষ্পরকে দায়ী করে দোষীদের শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.