রাঙামাটিতে জেলা ছাত্রলীগের কমিটির নাম ঘোষনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া ও জেলা আওয়ামীলীগের অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
জানাগেছে, বুধবার সকাল ১১টার দিকে জেলা আওয়ামীলীগ অফিসের জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রেরিত ছাত্রলীগের জেলার নতুন কমিটি সভাপতি হিসেবে রাঙামাটি সরকারী কলেজের ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আব্দুর জব্বার সুজন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জেলা ছাত্রলীগের উপ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক প্রকাশ চাকমাসহ অন্যান্য পদের নাম ঘোষণা দেন। ঘোষণার পরপরই কমিটির বঞ্চিত বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা জেলা আওয়ামীলীগের অফিসের জানালার গ্লাস,চেয়ারসহ অন্যান্য জিনিপত্র ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের টাঙানো ছবি মাটিতে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে অপর গ্রুপ এগিয়ে আসলে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় কিছু সময় ধরে যান বনরুপা-তবলছড়ি-রিজার্ভ রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, জেলা ছাত্রলীগের কমিটি থেকে পদ বঞ্চিত ও সভাপতি পদের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী রাশেদ, শাহাজামান রিপন, সুমন ও রুমির নেতত্বে একদল কর্মী জেলা আওয়ামীলীগের অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। ভাংচুরকারীদের মধ্যে কিছু অছাত্র ও বিএনপির ছাত্রদল থেকে কয়েকজন রয়েছে। তবে যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ছাত্রলীগের ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মেনে নিতে পারেনি বলেই তারাই অফিস ভাংচুর, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, দেশ নেত্রী শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ভাংচুর করেছে। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো একজন ছাত্রলীগের আদর্শিক হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, এ কাউন্সিলে অনেক প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করতে পারে। কিন্তু দলের মুল দায়িত্ব নেবে মাত্র দুজন সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক। আমাদের রাঙামাটির অভিভাবক হিসেবে দীপংকর তালুকদার রয়েছেন। তাকে সন্মান করে এর আগেও আমরা দলের দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি যে দুজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন তা দলের মঙ্গলের জন্য। তাছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা অনেক যাচাই-বাছাই ও সবাইয়ের সাথে মতামত নিয়েই এ দুজনকে দলের মুল দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই বলে পদ বঞ্চিত হয়ে ক্ষোভের বহিঃ প্রকাশ হিসেবে এ ধরনের ঘটানা ঘটানো অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ভাংচুরের ঘটনা রাষ্ট্রদোহিতার সামিল।ভাংচুরকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ও সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা সহকারী পুলিশ সুপার চিত্তরঞ্জন পাল জানান, বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গেল মঙ্গলবার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও নতুন কমিটি ঘোষণা না দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারন সম্পাদক সিদ্দিকী নাজসুল আলম ও মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা রাঙামাটি ত্যাগ করেন। বুধবার সকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা কমিটির নাম পাঠানো পর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা দলীয় অফিসে জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নাম ঘোষনার পর পর পদ বঞ্চিত পক্ষের নেতাকর্মীরা ভাংচুর করেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির মধ্যে কয়েকটি পদে নাম ঘোষনা করা হয়েছে। তারা হলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে সাইফুল আলম রাশেদ, সহ-সভাপতি এমএন কাউসার রুমি, যুগ্ম সম্পাদক রবেল চৌধুরী, সালাউদ্দিন টিপুকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় কার্য-নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে শাহনেওয়াজ টিপু।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.