দলীয় শৃংখলাভংগের অভিযোগে বান্দরবান জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মাবুদ ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং পৌর মেয়র মোঃ জাবেদ রেজাকে বহিস্কার করা হয়েছে।
বুধবার বান্দরবান জেলা বিএনপি’র সভাপতি সাচিং প্রু জেরীর বাস ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরী বর্ধিত সভা শেষে এই দুই নেতাকে বহিস্কারের ঘোষনা দেয়া হয়।
জরুরী বর্ধিত সভায় জেলা বিএনপি’র সভাপতি সাচিং প্রু জেরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোঃ ওসমান গনি ,সহ-সভাপতি চহ্লা প্রু জিমি, সাধারন সম্পাদক মোঃ আব্দুল আজিজ,যুগ্ন সম্পাদক মোঃ মুজিবর রশিদ,শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ,জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুস শুক্কুর,জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট কাজী মহতুল হোসাইন যত্ন,লামা বিএনপি’র সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াইনু মং চৌধুরী,লামা পৌর মেয়র আমির হোসেন,আলীকদম বিএনপি’র উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম,নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নুর আহাম্মদ কোম্পানী,থানছি উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি হামলাই ম্রোসহ জেলা বিএনপি’র ১০১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটির প্রায় ৫০/৬০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বহিস্কৃত দুই জনের বহিস্কারের পর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোঃ ফরিদুল আলম ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে ফেরদাউস হায়দার রুশুকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বান্দরবান জেলা বিএনপি’র সভাপতি সাচিং প্রু জেরী তার বক্তব্যে বলেন, জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মাবুদ ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং পৌর মেয়র মোঃ জাবেদ রেজা আ’লীগের কাছ থেকে নগদ অর্থ সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে বিএনপিকে ভাঙ্গার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা আ’লীগের মদদ পুষ্ট হয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের উপর হামলা মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্ব শেষ গত শনিবার বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বান্দরবান বালাঘাটায় এতিম খানায় আমিসহ বিএনপি ও ছাত্র দল নেতা কর্মীরা গরীব ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরন করার সময় জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মাবুদ ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং পৌর মেয়র জাবেদ রেজা সর্মর্থিত কিছু নেতাকর্মী আমাদের উপর হামলা চালায়। এঘটনার পর তাদের নেতা কর্মীরা আমাদের নেতা কর্মীদের উপর কয়েক দফা হামলা চালিয়ে আমাদের কয়েকজন নেতা কর্মীদের আহত করে। উল্টো আমাদের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ২টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,এতে স্পষ্ট প্রমানিত হয়েছে যে তারা দুজন বিএনপি’র পদ ব্যবহার করে আ’লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তাদের এত দিনের কর্মকান্ড এবং আ’লীগের সাথে আতাঁত দলীয় শৃংখলা ভংগের সাশিল ও দলের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এসময় তিনি প্রত্যেক অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন,আজ থেকে শুরু হল বিএনপি শুদ্ধি অভিযান। বহিস্কৃত এই দুই নেতার সাথে যে সকল নেতা কর্মী জড়িত ছিল তাদের খুজে বের করে বহিস্কার করার নির্দেশ দেন।
জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আব্দুল আজিজ জানান,জেলা বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে এই সিদ্ধান্তের কোন বিকল্প ছিল না। বর্ধিত সভায় জেলা বিএনপি’র ১০১সদস্যের মধ্যে প্রায় ৫০/৬০ জন উপস্থিত ছিলেন। বর্ধিত সভায় সর্ব সম্মতি ক্রমে এই দুজনকে বহিস্কারের প্রনয়নকৃত রেজুলেশনটি বুধবারেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে পৌছানো হবে।
এ বিষয়ে সদ্য বহিস্কৃত বান্দরবান জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মাবুদ ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং পৌর মেয়র মোঃ জাবেদ রেজা বলেন,বান্দরবান জেলা বিএনপি’র কমিটি অনুমোদন দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি। এখানে কোন নেতা কর্মীকে বহিস্কার করার সাচিং প্রু জেরীর ক্ষমতা নেই। কোন অপরাধে বহিস্কার করতে হলে আগে কারন দর্শানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়াও আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ও দিতে হবে। তারা আরও বলেন সাচিংপ্রু জেরী এক সময় কিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কুশ পুত্তলিকা দাহ করে প্রমান করেছিলেন তিনি বিএনপি চান না,তার প্রয়োজন ক্ষমতা।
জাবেদ রেজা বলেন বিএনপির সাধারন সম্পাদক,যুগ্ন সম্পাদক এবং সভাপতি নিজে আওয়ামীলীগ সভাপতির কাছ থেকে আবেদনের মাধ্যমে যেসব অর্থ গ্রহন করেছিলেন তার প্রমান সহ বেগম জিয়ার কাছে উপস্থাপন করবেন। তিনি এই সভাকে নাটক আখ্যায়িত করে বলেন এর মাধ্যমে প্রমানিত হয় তারাই মুলতঃ আওয়ামীলীগের দালাল। তিনি বান্দরবান জেলা বিএনপিকে দালালদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিএনপির নেতা কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.