পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা রাঙামাটি জেলায় সকল হাট-বাজার ও দোকানপাট বর্জনের কর্মসূচি পালন করবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(পিসিজেএসএস)।
এদিকে, এ কর্মসূচিকে ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশ,সেনা বাহিনী ও প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহন করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গত বছর ২৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জনসংহতি সমিতির প্রধান সন্তু লারমা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবীতে রোড ম্যাপ ঘোষনা না করলে ১ মে থেকে অসহযোগ আন্দোলন করা হবে বলে সরকারকে আল্টিমেটাম দেন। তবে ওই সময়ে আন্দোলনে না গিয়ে সরকারকে সময় দেয়া হয়। কিন্তু সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে রোডম্যাপ ঘোষনার দূরের কথা বরং চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম গ্রহনের মাধ্যমে জুম্মদের জাতিগতভাবে নির্মূলীকরনের কাজ জোরালোভাবে করে চলেছে। তাই ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্ষন্ত রাঙামাটি জেলায় সকল হাট-বাজার ও দোকান-পাট বর্জন কর্মসূচি পালিত হবে।
জনসংহতি সমিতির অভিযোগ সরকার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি আইন পাস করার কথা থাকলেও তা পাস করেনি। পর্যটন স্থাপনের নামে পাহাড়ীদের ভুমি অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, সরকারী আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের হাতে হর্টিকালচার ও রাবার বাগান স্থাপনের নামে জুম ভুমি ও মৌজা ভুমি জবর দখল করে ইজারা দিচ্ছে সরকার। পার্বত্যবাসীর চরম বিরোধীতা সত্বেও রাঙামাটিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী প্রহরায় চলছে মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন প্রকল্পের কাজ। সরকার একের পর এক জুম্ম জনগনের নির্মুলীকরন কাজ করছে এমন অবস্থায় বসে থাকার সময় নেই, তাই সরকারের গণবিরোধী সকল কার্যক্রম প্রতিহত করতে হবে।
অন্যদিকে বাঙালী ভিত্তিক পার্বত্য নাগরিক কমিটি, পার্বত্য ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য যুব ফ্রন্টের পক্ষ থেকে এ বর্জন কর্মসূচির প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়েছে পৃথক পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে।
এদিকে, জনসংহতি সমিতির হাট-বাজার ও দোকানপাট বর্জনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ কর্মসূচি সফল করতে মঙ্গলবার জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন বাজার ও দোকানে লিফলেট বিতরণ করেছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ তথ্য প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে বিভিন্নভাবে সময় দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে কোন ধরনের উদ্যোগ বা রোডম্যাপ ঘোষনা করেনি। বরং জুম্ম স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ বজর্ন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর আলম খান জানান,এ বর্জন কর্মসূচিকে ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশ,সেনা বাহিনী ও প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহন করেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.