রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও দীপংকর তালুকদার সন্তু লারমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আন্দোলনের ডাক জনগনের কাছে অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ। তাই সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহন না করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ থেকে সকলে পদত্যাগ করে আন্দোলনের ডাক দিন, তখনই জনগন আপনার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে পরিস্কার হতে পারবে।
তিনি আরও বলেন,জনসংহতি সমিতি কর্তৃক আহুত অসহযোগ আন্দোলন হচ্ছে সাধারন মানুষকে ক্ষতি করার আন্দোলন। এ আন্দোলন নিয়ে জনসাধারন বিভ্রান্ত। এখানকার সাধারন পাহাড়ী-বাঙ্গালী অপেক্ষায় থাকেন কখন বাজার বসবে। অথচ এ বাজার বন্ধের ঘোষণা দিয়ে তারা সাধারন মানুষের পেটে আঘাত করেছেন।
একটা বড় ধরনের অভিসন্ধি নিয়ে জনসংহতি সমিতি এ ধরনের জনবিরোধী কর্মসূচীর ঘোষণা করেছে উল্লেখ করে তিনি সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থেকে সাধারন মানুষের পাশে থাকার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সোমবার জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলা স্বেচ্ছা সেবক দলের আহবায়ক মোঃ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পরিষদ সদস্য হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, যুগ্ম সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল,জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোঃ রফিকুল মাওলা,জেলা শ্রমীকলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ শামসুল আলম,জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নূর মোঃ কাজল, জেলা স্বেচ্ছাসবকলীগ নেতা মোঃ শাওয়াল উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের জেলা সভাপতি মোঃ জাগাঙ্গীর আলম,মোঃ শাহজাহান, শহর আওয়ামী-মৎস্যজীবিলীগের সাধারন সম্পাদক শ্যামল দেব প্রমূখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন -স্বেচ্ছাসেবকলীগের জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা।
অস্ত্রের কাছে রাঙামাটি সাধারন মানুষ এখন জিম্মি হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে দীপংকর তালুকদার তার বক্তব্যে আরও বলেন রাঙামাটির পৌরএলাকার ৫নং ওয়ার্ডে রোববার যে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে তাতে বোঝা যাচ্ছে বর্তমানে পৌর এলাকার মানুষ ও নিরাপদ নয়।
তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাস দমনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাস দমন করতে পারলে এখানে পারবে না কেন ? তিনি বলেন, আমরা কোন দলকে দায়ী করে কোন বক্তব্য রাখছি না, আমরা বক্তব্য রাখছি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে. আমরা বক্তব্য রাখছি অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে। কারন সাধারন মানুষ সন্ত্রাসীদের শিকার হয়ে প্রাণ দিক তা আমরা চাই না। পার্বত্য এলাকায় অবৈধ অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন,রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার এ অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে কোনরকম ভূমিকা রাখছেন না। তিনি বলেন, কাপ্তাই লেকে মাছ মারা বন্ধকালীন সময়ে এখানকার জেলেদের ভিজিএফ কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা থাকলে ও এবার মাছ মারা বন্ধকালীন সময়ে জেলেদের কোন রকমের সহায়তা প্রদান করা হয়নি।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং ছিল না। বর্তমানে প্রায়শই রাঙামাটি জনসাধারন বিদ্যুতের ভোগান্তিতে রয়েছে। এছাড়া জনসাধারনের অন্যান্য যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা ছিল সেসব সুযোগ সুবিধা থেকে জনগন এখন বঞ্চিত। এজন্য জনসংহতি সমিতি সরকারকে দায়ী করে বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে। অথচ এসকল সমস্যা তুলে ধরার দায়িত্ব এখান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের, তিনি তা তুলে ধরছেন না। জনসাধারনের এসব সমস্যা হচ্ছে বর্তমান সংসদ সদস্যের অদক্ষতার কারনে, তিনি এখানকার জনসাধারনের সমস্যার কথা তুলে ধরছেন না বিধায় জনগনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জনসাধারনের সমস্যার কথা তুলে ধরতে প্রকৃত সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালনের জন্য ঊষাতন তালুকদারকে আহবান জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.