• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
রাবিপ্রবি’তে জুলাই বিপ্লবের স্মরণে র‌্যালি ও দোয়া অনুষ্ঠিত                    পার্বত্য চট্টগ্রামে ছয় মাসে ১০৩টি মানবধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে                    কাপ্তাইয়ে সাতটি দোকান পুড়ে ছাই                    জুরাছড়িতে এসডিজির স্থানীয়করণ এবং ত্বরানিত লক্ষে কর্মশালা                    আহত অবস্থায় উদ্ধার করা সাম্বার হরিণটিকে বাঁচানো গেল না                    রাঙামাটিতে সাংবাদিকতা ও ফ্যাক্ট চেক বিষয়ক যুব প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত                    রাবিপ্রবি’র রিজেন্ট বোর্ডের ৭ম সভা অনুষ্ঠিত                    রাবিপ্রবি`র নির্মানাধীন দুটি ভবন থেকে চাঁদার দাবিতে দুর্বৃত্তদের সশস্ত্র মহড়া                    রাঙামাটি জেলা পরিষদে নিয়োগ ও শিক্ষা বৃত্তিতে বৈষম্য বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন                    রাঙামাটিতে এইচএসসির পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক                    বিলাইছড়িতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন                    রাবিপ্রবি’তে একাডেমিক কাউন্সিলের ১২তম সভা অনুষ্ঠিত                    রাবিপ্রবি’তে পরিকল্পিত বনায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন                    রাঙামাটিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে সনাক-টিআইবি’র অ্যাডভোকেসি সভা                    খাগড়াছড়িতে বীর শহীদদের প্রতি আরাফাত রহমান কোকোর ক্রীড়া পরিষদের শ্রদ্ধাঞ্জলী                    সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের গ্রেড উন্নীতকরণের দাবীতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি                    পাহাড়ে খড়ের পরিবর্তে শুকনা কলা পাতায় মাশরুম চাষে সাফল্য                    লংগদুতে গৃহবধূকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে এক যুবক আটক                    পাহাড়ে হাতি ও মানুষরে দ্বন্দ্ব কমছে                    রাঙামাটিতে ৮৫ হাজার ৮৬০ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস খাওয়ানো হবে                    শিশুর যৌন নির্যাতনকারী দাদুকে আটক করেছে পুলিশ                    
 
ads

এমএন লারমার ৭৬ তম জন্মদিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে আলোচনা সভা
শাসকগোষ্ঠী উপনিবেশিক কায়দায় শাসনের নামে জুম্মজনগনকে শোষন-নিপীড়ন চালাচ্ছে-সন্তু লারমা

স্টাফ রিপোর্টার : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 15 Sep 2015   Tuesday

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) পার্বত্য অভিযোগ করে বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রমের জুম্ম জনগণ বংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার বা শাসকগোষ্ঠী উপনিবেশিক কায়দায় শাসনের নামে জুম্মজনগণকে শোষন-নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্বের শেষ প্রান্ত অনেক আগেই পাড় হয়ে গেছে। আজকে তাদের একটা অনিরাপদ জীবন ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর চুক্তিকে বিলুপ্তি করতে সরকার তথা শাসকগোষ্ঠী নানান ধরনের যড়যন্ত্র চালাচ্ছে। উন্নয়ন নামে জুম্মগণকে বিলুপ্তির যড়যন্ত্র চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। চোখের সামনে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের বছরের পর বছর অন্যায়-অবিচার,দুর্নীতি, সন্ত্রাস চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যকে ধ্বংস করে দিয়ে ইসলামিক সম্প্রসারণবাদ প্রতিষ্ঠার যড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না।

তিনি বলেন, প্রয়াত মহান নেতা এমএন লারমা পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে এমন একটি শাসন ব্যবস্থা চেয়েছিলেন যে শাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জুন্মজনগণের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষিত থাকবে। কিন্তু পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ার কারনে সেই শাসন ব্যবস্থা এখনো অর্জিত হয়নি। তাই পার্বত্যাঞ্চলের বুকে চলছে আন্দোলন-সংগ্রাম। যে আন্দোলন-সংগ্রাম স্বাধিকার-অধিকার ও জাতীয় অস্তিত্বের মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার।

মঙ্গলবার বিকালে রাঙামাটিতে সাবেক সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার(এমএন লারমা) ৭৬ তম জন্মদিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।

জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এমএন লারমা মেমোরিয়েল ফাউন্ডেশন ও এমএন লারমা স্মৃতি গণপাঠাগারের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভায় অতিথি আলোচক ছিলেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। এমএন লারমা মেমোরিয়েল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ আলোচক ছিলেন, ২৯৯নং আসনের সাংসদ উষাতন তালুকদার। অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য মাধবীলতা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা,ফেনীর সোনাগাজী সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক বিপম চাকমা। বক্তব্যে রাখেন পিসিপির নেতা মনোলিসা চাকমা ও অনিল মারমা। অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মৃত্তিকা চাকমা। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা শিশুদের রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরণ করেন।

সন্তু লারমা অভিযোগ করে আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে বহুমূখী কর্তৃপক্ষ শাসন চলছে। এখানে অপারেশন উত্তরণ নামে এক ধরনের সেনা কর্তৃত্ব চলছে। যে কর্তৃত্ব পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান শাসন ব্যবস্থা প্রাধান্য বিস্তার করছে। পাশাপাশি ১৯০০ সালের শাসনবিধি নামে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা যে দায়দায়িত্ব সম্পাদন করছেন তা জুম্মগনগণের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলা যায় না এবং এ শাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জুম্মজগণের বহুকষ্টে অর্জিত পার্বত্য চুক্তি বারে বারে লংঘন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে দুর্নীতি-অনিয়ম, দলীয়করন এবং জুম্ম জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করা হয়েছে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে জুম্ম জনগোষ্ঠীদের মধ্যে যারা চুক্তি বিরোধীতা করে দেশের জাতীয় রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হয়ে এ ধরনের জুম্ম স্বার্থ বিরোধী কাজ করছে তাদের উদ্দেশ্য বলেন, এ ধারনের দালাল লেজুরীপনাদের সর্তক করার সময় অনেক আগেই অতিক্রম হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে জুম্মজনগনের মধ্যে থেকে আজকে যারা সাধারণ প্রশাসনের সাথে আইন-শৃংখলা ও উন্নয়ন নামের সাথে যুক্ত হয়ে তারা জুম্মজনগণের অধিকারকে হরণ ও পদদলিত করেছে। তারা তাদের দালালিপনা প্রমাণ করেছে। জুম্মজনগণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী অধিবাসীদের বুঝতে হবে শাসনের নামে দুঃশাসন চলছে, অস্তিত্ব ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলছে। তাই সময় এসেছে এ বিষয়টি গভীরভাবে উপলদ্ধি করার এবং প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া।

তিনি বলেন, মহান নেতা প্রয়াত এমএন লারমা একটি শাসন ব্যবস্থা চেয়েছিলেন যে শাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জুম্মজনগনের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষিত হতে পারবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে থাকবে শোষনহীন সমাজ ব্যবস্থা। কিন্তু পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পরেও সেই শাসন ব্যবস্থা এখনো অর্জিত হয়নি। 

সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে যে বাস্তবতা সেই বাস্তবতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভাষাভাষি জুম্মজাতির জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষন, তাদের জন্য একটা সুশাসন ব্যবস্থা থাকবে। যে শাসন ব্যবস্থা জুম্ম জাতীর জাতীয় অস্তিত্বকে সংরক্ষণ করবে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালে সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মজনগণের স্বাধিকার-অধিকার স্বীকৃতির জন্য এমএন লারমা চার দফা দাবী তুলেছিলেন। তার আগেও ১৯৬৪ সালের নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিবাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবিতে জুম্মজাতিসমুহের অধিকার, আতœনিয়ন্ত্রনাধিকার, সুশাসনের অধিকারের কথা ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তিতে জুম্ম জনগণের তাদের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষন, সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটা এখনো হয়নি।

প্রধান আলোচক বক্তব্যে চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের যে সকল সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের থেকেও এমএন লারমার অনেক প্রজ্ঞাবান  বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন তার তুলনা হয় না। এমএন লারমা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও অধিকারের যেসব দাবী তুলেছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যদিও পার্বত্য চুক্তিকে অনেকে শান্তি চুক্তি বলে থাকেন। কিন্তু এ চুক্তি হয়েছে স্বশাসনের চুক্তি। তাই এ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের স্বশাসনের প্রতিফলিত হবে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ অন্যান্য আইনে জেলা প্রশাসক কারবারী নিয়োগের কথা কোথাও লেখা নেই। যদি জেলা প্রশাসক কারবারী নিয়োগ করে থাকেন তাহলে তিনি আইন লংঘন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এমএন লারমা একজন প্রগতিশীল ও বড় মনের মানুষ ছিলেন। এমএন লারমা নারী,মেহনতী মানুষ শ্রমিক ও কৃষদের অধিকারের কথা সংসদে জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি চেয়েছিলেন শোষনহীন একটা সমাজ ব্যবস্থা। তাই তিনি শুধু আদিবাসীদের নেতা ছিলেন না তিনি সারাদেশের মেহনতী মানুষের নেতা ছিলেন। এমএন লারমা আদর্শ ও তার জীবনী নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশী করে তুলে ধরার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য,১৯৩৯ সালের ১৫সেপ্টেম্বর রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা মহাপ্রুম গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন সাবেক সাংসদ প্রয়াত নেতা এমএন লারমা। তিনি ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর বিভেদপন্থীদের হাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
এই বিভাগের সর্বশেষ
আর্কাইভ