ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় কমিটি পার্টির দেড় যুগ পূর্তিতে রোববার সর্বস্তরের জনগণের প্রতি সংগ্রামী শুভেচ্ছা ও বিপ্লবী অভিবাদন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি প্রসিত খীসা ও সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন ও ভূমি কমিশনের মূলো ঝুলিয়ে রেখে জনগণকে আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করেছেন। তারা বলেন,যে সরকার গত দীর্ঘ ১৯ বছরে চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি, ভূমি কমিশনের অগণতান্ত্রিক ধারা সংশোধন করতে ১৫ বছর কাল ক্ষেপণ করেছে, সে সরকারের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে বিশ^াস স্থাপন করা জনগণের জন্য আত্মহননের সামিল। ভূমি পুনরুদ্ধারের আইনী লড়াইকে একটি উচ্চতর রাজনৈতিক সংগ্রামে উন্নীত করতে হবে। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি সমস্যা হলো মূলত একটি রাজনৈতিক সমস্যা।
রোববার ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ নিরন চাকমার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকারের মিথ্যা ও প্রতারণামূলক প্রতিশ্রুতিতে আস্থা না রেখে ও সুবিধাবাদী, দালাল ও প্রতিক্রিয়াশীলদের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারণায় কর্ণপাত না করে চলমান হৃত ভূমি পুনরুদ্ধারের সংগ্রামসহ পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই জোরদার করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর গঠনের পর থেকে ইউপিডিএফ কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সকল ধরনের অন্যায় অবিচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াই সংগ্রামে বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, সব সময় জনগণের পাশে থেকেছে এবং তাদের চরম দুর্দিনে ও দুঃসময়ে আশার আলো দেখিয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল বিরোধী গণ সংগ্রাম, যৌন সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং সংবিধানে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংখ্যালঘু জাতির উপর বাঙালি জাতীয়তাবাদ আরোপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউপিডিএফের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণ করে ইউপিডিএফ নেতৃদ্বয় বলেন, ‘আধুনিক মতাদর্শে সুসজ্জিত একটি আদর্শিক ও সুশৃঙ্খল পার্টি ছাড়া বর্তমান দুনিয়ায় কোন আন্দোলনে জয়যুক্ত হওয়া যায় না; অপরদিকে এ ধরনের পার্টি ও জনগণ এক মন এক প্রাণ হয়ে সংগ্রাম করলেই কেবল অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।
বিবৃতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘ইউপিডিএফের এতদূর আসার পেছনে রয়েছে আড়াই শতাধিক নেতা, কর্মী ও সমর্থকের আত্মবলিদান এবং আরো শত শত নেতা কর্মী ও সমর্থকের জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ, ত্যাগ তিতিক্ষা, প্রতিক্রিয়াশীলতা, সুবিধাবাদিতা ও দালালির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং জনগণের পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আদায়ের বৃহত্তর সংগ্রাম এক ও অভিন্ন।
প্রতিক্রিয়াশীল, সুবিধাবাদী ও দালালদের মুখোশ উন্মোচন ও তাদের পরাস্ত না করে জনগণের কোন আন্দোলন জয়যুক্ত হতে পারে না। এ জন্য যারা আন্দোলনের নামে বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টি করে নিজেদের হীন ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য তারা জনগণের প্রতি বিবৃতিতে আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় এক সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.