রাঙামাটির রাজ বন বিহারে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় গুরু শ্রাবকবুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবিরের(বন ভান্তে) বৃহস্পতিবার(৩০ জানুয়ারী) দ্বিতীয় তম পরিনির্বাণ স্মরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।উল্লেখ্য, গত বছর ৩০ জানুয়ারী ৯৩ বৎসর বয়সে বার্ধক্যজনিত রোগে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় আর্যশ্রাবক বনভান্তে মহাপরিনির্বাণ(দেহত্যাগ) লাভ করেন।বর্তমানে বনভান্তের মরদেহটি রাঙামাটির রাজ বন বিহারে বিজ্ঞান ও বিনয় সম্মতভাবে পেটিকাবদ্ধ অবস্থায়(বিশেষ কফিন) রাখা হয়েছে।রাজ বন বিহার মাঠে অনুষ্ঠিত পরিনির্বাপ্রাপ্ত আর্যশ্রবাক বনভান্তের দ্বিতীয় তম পরিনির্বাণ দিবস উপলবেৃহস্পতিবার সকালের দিকে বুদ্ধপূজা, বুদ্ধ মূর্তিদান,পঞ্চশীল গ্রহন, পিন্ডদান,অষ্টপরিস্কারদান অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে পরিনির্বাণপ্রাপ্ত বনভান্তের ধর্মীয় স্মরণ সভা ও সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়।অনুষ্ঠানে ধর্ম দেশনা দেন রাঙামাটি রাজ বন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এছাড়া ধর্মদেশনা দেন রাজ বন বিহারের ধর্মীয় গুরু বৃগু মহাস্থবির,জনপ্রিয় মহাস্থবির ও বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির।বন ভান্তের স্মৃতিচারন করে বক্তব্যে দেন রাজ বন বিহারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন রাজ বন বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক প্রতুল বিকাশ চাকমা।সকল প্রানীর সুখ ও মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা পাঠ করে রাজ বন বিহারের সিনিয়ন সহ-সভাপতি গৌতম দেওয়ান। এসময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন দেওয়ান,তারাচরণ চাকমা প্রমুখ।অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাজ বন বিহার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি নিরুপা দেওয়ান। অনুষ্ঠান শেষে রেকর্ডকৃত বনভান্তের ধর্মীয় দেশনা বাজানো হয়। অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার ভক্ত ও পুনার্থী শরিক হন।এর আগে জুরাছড়ির শলক ও বরকল উপজেলাবাসীর উদ্যোগে জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বর থেকে রাজ বনবিহার প্রাঙ্গণ পর্ষন্ত এক শোক র্যালী বের করা হয়।অরপদিকে সকালের দিকে বিভিন্ন বয়সের হাজারো ভক্ত ও পুর্নাথী রাজ বন বিহারের বিশ্রামাগারে পেটিকাবদ্ধ অবস্থায়(বিশেষ কফিন) রাখা বনভান্তের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।ধর্মীয় অনুষ্ঠানে চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় তার বক্তব্যে পরিনির্বাণপ্রাপ্ত বনভান্তেকে স্মরণ করে বলেন, বনভান্তের যে হিতোপদেশ ও ধর্মপোদেশ দিয়ে গেছেন তা সকল প্রাণীর মঙ্গলের জন্য। তাই বনভান্তের হিতোপদেশ সবাইকে পালন করতে হবে।রাজ বন বিহারের ভিক্ষু সংঘের আবাসিক প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির সকল প্রাণীর প্রতি শান্তি ও মঙ্গল কামনা করে গৌতম বুদ্ধের অহিংসার বাণী ও বনভান্তের মহামূল্যবান ধর্মোপোদেশ মেনে চলতে এবং প্রত্যেককে যে যার কর্ম ভালভাবে সম্পাদনের জন্য হিতোপদেশ প্রদান করেন।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.