পার্বত্য চুক্তির যথাযথ, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং সমতল অঞ্চলে আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশনের দাবিতে আয়োজিত পূর্ব নির্ধারিত গণ-মাবনবন্ধন কর্মসূচি খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পালন করতে দেয়নি পুলিশ। এর প্রতিবাদের তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১ পর্যন্ত যৌথভাবে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম (পার্বত্য চট্টগ্রাম শাখা) ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক।
তিন সংগঠনের ডাকে গণ মানববন্ধন কর্মসূচি খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার ধুধুকছড়া থেকে শুরু হয়ে রাঙামাটি জেলা হয়ে বান্দরবারন জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুনধুম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মানববন্ধনের সংগঠকরা চেঙ্গী স্কোয়ারে জড়ো হয়। এ সময় পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নেই অজুহাত দেখিয়ে আয়োজনকারীদের মানববন্ধন করতে বাঁধা দেয়। এরপর তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি কনভেনশন সেন্টারে গিয়ে মানববন্ধনে বাঁধা দেওয়ার প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ১৫ দিন পূর্বে মানববন্ধন কর্মসূচির কথা জানিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। অথচ জেলা প্রশাসন সুপরিকল্পিতভাবে কর্মসূচি দিনের একদিন পূর্বে (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘মানববন্ধনের অনুমতি দেয়া হবে না’ বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির আহ্বাযক গৌতম দেওয়ানকে টেলিফোনে জানিয়ে দেন।
মানববন্ধনের মতো শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কর্মসূচির অনুমতি না দেওয়া সংবিধানের স্বীকৃত সভা সমাবেশের অধিকার, বাক স্বাধীনতার অধিকার তথা রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী ও বরখেলাপ। প্রশাসনের এই আচরণকে অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী, অত্যন্ত বাড়াবাড়ি ও গণবিরোধী আখ্যায়িত করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলন থেকে পার্বত্য চুক্তির যথাযথ, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সময়সূচি ভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন করা, পার্বত্য চুক্তির আলোকে প্রণিত ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ সংশোধন ও আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত ভূমি অধিকার স্বীকৃতির দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সদস্য ও সাবেক যুগ্ম সচিব উক্য জেন, সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক বোধিসত্ত দেওয়ান, সাবেক অধ্যক্ষ ড. সুধীন কুমার চাকমা, অধ্যাপক মধুমঙ্গল চাকমা, প্রাক্তন শিক্ষক প্রজ্ঞাবীর চাকমা, সমাজ সেবক রবিশংকর তালুকদার, শেফালিকা ত্রিপুরা, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি রানী ত্রিপুরা প্রমুখ।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পুলিশ মানববন্ধন করতে না দিলেও সদর উপজেলায় অন্য এলাকা স্বনির্ভর এলাকা, গিরিফুল এলাকা, দুই নম্বর রাবার বাগান এলাকা, ভাইবোন ছড়া, লতিবান, পানছড়ি, ধুধুকছড়া, মহালছড়ি, মাইসছড়ি, বিজিতলা এলাকায় হাজার হাজার আদিবাসী মানববন্ধনের স্বতষ্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন দাবী সম্বলিত ব্যানার ও প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.