পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ( সন্তু লারমা ) অভিযোগ করেছেন, সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরও পাহাড়ে উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা চলছে। সম্পূর্ণ উপনিবেশিক কায়দায় পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন ব্যবস্থা জিইয়ে রেখেছে শাসকগোষ্ঠী।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, শাসকগোষ্ঠী তথা সরকার চায় পার্বত্যাঞ্চল থেকে জুম্ম জনগণকে নিশ্চিহ্ন করতে। এজন্য সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসছে না। সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় পার্বত্যাঞ্চলে ত্রুমাগত অনুপ্রবেশ ও বহিরাগতদের মাধ্যমে ভূমি বেদখল করা হচ্ছে। চলছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ইসলামিকরণ ও সামরিকীকরণের ষড়যন্ত্র। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বেড়ে চলেছে সাম্প্রদায়িক,মৌলবাদী ও উগ্র জাতীয়তবাদী শক্তির অপতৎপরতা। শাসনের নামে চলছে অরাজকতা ও নিষ্ঠুরতা।
বৃহস্পতিবার রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের(পিসিপি) জেলা শাখার ১৮তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারী পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে জাতীয় সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি সমালোচনা করে সন্তু লারমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে যে বক্তব্যে তুলে ধরেছেন তা যথাযথ নয়। প্রধানমন্ত্রী আগের মতোই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। চুক্তির অনেক ধারা বাস্তবায়ন না করেও প্রধানমন্ত্রীর তাঁর বক্তব্যে যে ‘সম্পূর্ণ’ বা ‘আংশিক’ বাস্তবায়নের দাবি করেছেন তা উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রী যদি এ ধরনের ভাষন দিতে পারেন তাহলে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর অন্তরে কি নিহিত রয়েছে তা জুম্ম জনগন থেকে ছাত্র সমাজ ও যুব সমাজকে অনুধাবন করতে হবে।
তিনি ছাত্রদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় একজন তরুন প্রকৃত শিক্ষিত হতে পারে না। আংশিক শিক্ষায় বিপ্লবী চেতনায়, প্রগতিশীল চেতনায় উদ্দীপ্ত করতে পারে না। এ জন্য তার বাইরে বিভিন্ন ধরনের পড়াশুনা করে নানা কাজে যুক্ত থাকতে হবে। তিনি পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন আন্দোলনকে জোরদার করতে ছাত্র ও যুব সমাজসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সন্মেলনে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি অধিরাম চাকমার সভাপতিত্ব বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার বিভাগের সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা, জনসংহতি সমিতির জেলা শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ তঞ্চঙ্গ্যা, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক ত্রিজিনাদ চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি জড়িতা চাকমা ও পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা।
এর আগে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিন ব্যাপী সন্মেলনের উদ্ধোধন করা হয়। সন্মেলনে রাঙামাটির দশ উপজেলার থেকে প্রায় দুই শতাধিক পিসিপি’র নেতাকর্মী অংশ গ্রহন করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.