গারো তরুণীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে.রোববার ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনকেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মিনাকি চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক রিনা চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি এম.এম পারভেজ লেনিন, ল্যাম্পপোষ্ট ও গণমুক্ত গানের দল’র নাহিদ সুলতানা লিসা প্রমুখ। সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবে সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা গারো তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, নারীরা আজ ঘরে-বাইরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, কর্মস্থলে কোথাও নিরাপদ নয়। কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গারো তরুণীকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনাই তা প্রমাণ করে। দিন দিন যেভাবে যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে তাতে নারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। কিন্তু সরকার নারীদের কোন নিরাপত্তা দিতে পারছে না। অপরাধীদেরও কোন শাস্তি হচ্ছে না। বর্ষবরণ উৎসবে টিএসসি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর ওপর যৌন হয়রানির ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই বিচারহীনতার কারণেই এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে।
বক্তারা আরও বলেন, গোটা দেশে এখন ধর্ষণের সংস্কৃতি চলছে। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, অপহরণ, নগ্ন দৃশ্য মোবাইল-ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার মতো ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। কিন্তু এসবের কোন প্রতীকার হচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় এসব ঘটনা ঘটছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতনের চিত্র আরো ভয়াবহ উল্লেখ করে বলেন, সেখানে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক ও তাদের যোগসাজশেই নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে গারো তরুণীকে ধর্ষণের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, কর্মজীবী নারীর নিরাপদে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আইন করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মক্ষেত্র সর্বত্র নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা, অশ্লীল-বিকৃত প্রকাশনা-ভিডিও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা, সুষ্ঠু মানবিক বোধ জাগ্রত করার নৈতিক শিক্ষা জোরদার করা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্টের ওপর থেকে গোপন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে গারো তরুনী কর্মস্থল থেকে উত্তরার বাসায় ফিরতে কুড়িল বিশ্বরোডে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় দুব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তরুনীর হাত-পা ও মুখ বেধে ফেলার পর মাইক্রোবাসের চালকসহ মোট ৫জন ওই তরুনীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে উত্তরার জসীম উদ্দীন রোডে নামিয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ওই তরুনী যুমনা ফিউচার পার্কে পোশাক বিক্রির একটি শোরুমে খন্ডখালীন বিক্রয়কর্মী।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.