শনিবার সকল নারীর উপর যৌন নিপীড়নকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পক্ষ থেকে নিটোল চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র, যুব, নারী, সংস্কৃতিকর্মী, পেশাজীবী ও আদিবাসীদের ৫০টির অধিক সংগঠনসমূহের মিলিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। বক্তব্য রাখে প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট নাট্যকার মামুনুর রশীদ, নারী নেত্রী নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবীর, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমুল হক প্রধান এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, গণসংহতি আন্দোলনের সভাপতি জোনায়েদ সাকি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দীপায়ন খীসা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাজীব মীর, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি চঞ্চনা চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য রাখি ¤্রং, গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের টনি চাম্বুগং, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সুমন মারমা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও গণজাগরণ মঞ্চের নেতা লাকী আক্তার, মানবাধিকার কর্মী রোজালিন ডি কস্তা, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এসোসিয়েশনের নির্মল রোজারিও, ট্রাইবেল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি তপন মারাক প্রমুখ। সমাবেশে প্রতিবাদী গান পরিবেশ করেন গানের দল মাদল, সঙ্গীত শিল্পী জান্নাত এ ফেরদেীসী।
এছাড়া এ প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, কাপেং ফাউন্ডেশন, ব্লাস্ট, নিজেরা করি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাগাছাস, গাসু, আরডিসি, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, ঐক্যন্যাপ, জনউদ্যোগ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন,আইইডি, নারীপক্ষ, বাপা, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কুবরাজ, উদীচী, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারী সেল, এএলআরডি, বিলা-আদিবাসী লইয়ার এসোসিয়েশন, জাতীয় হাজং সংগঠন, জয়েনশাহীআদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ, সিসিডিবি, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এসোসিয়েশন, আদিবাসী বিষয়ক জাতীয় কোয়ালিশন, যেীন নিপীড়ন বিরোধী নির্দলীয় জোটসহ অনেকে।
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ৫ দফা দাবী জানানো হয়েছে। সেগুলো হল আদিবাসী নারীসহ সকল নারীর নিরাপত্তা বিধান,আক্রান্ত আদিবাসী নারীকে অযথা হয়রানি বন্ধ করা,রাষ্ট্রকে নিপীড়নের শিকার আদিবাসী গারো নারীকে দায়িত্ব নিতে হবে, গ্রেফতারকৃত আসামীসহ সকল আসামীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং ধর্ষকদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন রাজধানীতে গারো নারী ধর্ষনের ঘটনায় ও দেশের নারী নিপীড়ন বিরুদ্ধে সবাইকে একসাথে আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে। সরকারকে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জের আদিবাসী নারী নেত্রীর উপর নিপীড়নের ঘটনাসহ অনেক ঘটনার এখনো ঘটনার অভিযুক্তদের শাস্তির বিধান করা হয়নি, যার কারণে এই ঘটনা প্রতিনিয়ত আদিবাসী নারীদের উপর নিপীড়নকারীরা করার সাহস পাচ্ছে।
বর্ষীয়ান রাজনীতিক পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, আদিবাসীদের উপর প্রতিনিয়ত হামলা, ধর্ষন, ভূমি থেকে উচ্ছেদের ঘটনা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। দেশের বর্ষবরণের ঘটনা, কল্পনা চাকমা, বিচিত্রা তির্কী সহ নারীর প্রতি অনেক সহিংস ঘটনায় সরকার কার্যকর পদক্ষেপ বিধান করেনি। সর্বশেষ গারো নারীর ধর্ষনের ঘটনা যুক্ত হয়েছে। সরকারকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
সঞ্জীব দ্রং বলেন, বিরামহীন আন্দোলন ও প্রতিবাদের মুখে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানীতে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে গারো আদিবাসী নারী ধর্ষনকারী ধর্ষক দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। অবিলম্বে আদিবাসী নারী ধর্ষনের ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করতে হবে এবং দেশে আদিবাসী নারী নির্যাতনের বিচারহীনতা ও জবাদিহিহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। আদিবাসী সহ সকল নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিয়তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা আশা রাখবো রাষ্ট্র তার এই দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হবে।
--হিলিবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.