বান্দরবানের লামায় এক যুবতীর কাটপিস নগ্নছবি প্রকাশের অভিযোগ আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের বাবার বাড়ির পাশ্ববর্তী খামার বাড়ির মালিক আব্দুল মোতালেবের পুত্র মোঃ আব্দুল্লাহ (১৯) ভিকটিমের ছোট বোনকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্য সম্পন্ন করে। এ ঘটনায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ গত ১৮ অক্টোবর লামা বাজারস্থ আবাসিক হোটেল সী-হিলে ৫বছর পরে উভয়ের বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বিষয়টি আপোষ মীমাংসায় নিস্পিত্তি হয়।
বিষয়টি মনে প্রাণে মেনে নিতে না পেরে ধর্ষক ছেলের পিতা মোঃ মোতালেব মেয়ের(ভিকটিম) বড় বোনকে চরিত্রহীন ও বাবার মর্যাদা হানির জন্য ষড়যন্ত্র করে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার (মোতালেব) আত্মীয় ও খামারের কর্মচারী সৈয়দ আলম(৩৫) দিয়ে ভিকটিমের ছবি সংগ্রহ করে একটি উলঙ্গ ছবির সাথে কম্পিউটারের ফটোশপ-এর মাধ্যমে জোড়া দিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে দেয়।
২৪ নভেম্বর লামা সদর ইউনিয়নের মওলার চর ইব্রাহীমের দোকানে সৈয়দ আলম ইব্রাহীমকে ছবি ৩টি দেখায় ও তার মোবাইলে কপি করে দেয়। ইব্রাহীম ভিকটিমের স্বামীর পরিচিত। ইব্রাহীম ছবিগুলো দেখে চিনতে পেরে নগ্ন ছবির বিষয়ে ভিকটিমের দুবাই প্রবাসীকে ফোন করে জানায়। বিষয়টি জানতে পেরে ভিকটিমের স্বামী ফোনে তালাক দেবে বলে জানায় এবং বর্তমানে তিনি সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।
ভিকটিমের পিতা-মাতা এ প্রতিবেদককে জানায়, তার ছোট মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করে তার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে মোতালেবের ছেলে আব্দুল্লাহ। শুধুমাত্র লোকলজ্জার ভয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের চাপে বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করি। সিদ্ধান্ত হয় যে আগামী ৫বছর পরে তার মেয়ের বয়স ১৮বছর পূর্ণ হলে তার মেয়েকে ছেলের বউ করে নেবে মোতালেব। ৫লক্ষ টাকা দেনমোহর দিয়ে আপোষনামা সম্পন্ন করে স্থানীয় বিচারকরা।
কিন্তু ৩ মাস না যেতে ভবিষ্যতে বিবাহ বন্ধ করতে মামলার ২নং আসামী মোতালেব এর সহযোগিতায় ১নং আসামী সৈয়দ আলম আমার বিবাহিত বড় মেয়ের ছবি নগ্ন ছবির সাথে জোড়া দিয়ে ছড়িয়ে দেয় এলাকায়। এতে করে তার সুখের সংসার ভাঙ্গতে বসেছে। তাদের কারণে দুইটি মেয়ের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাদর জীবনের পথচলাকে রুদ্র করেছে। তিনি নিরুপায় হয়ে প্রতিকার চেয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩ জানুয়ারী তার মেয়ে বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করে। লামা কোর্টের পিটিশন মামলা নং ০১/২০১৬।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মোতালেব মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নগ্ন ছবিগুলোর বিষয়ে তিনি জেনেছেন। বিগত দিনে ভিকটিমের বাবার সাথে আমার জায়গা সীমানা নিয়ে বিরোধ ছিল। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তারা নিজেরা একাজ করা হয়েছে।
অপর আসামী সৈয়দ আলম বলেন, নগ্ন ছবিগুলো আমি একজন কাছ থেকে পেয়েছিলাম। ইব্রাহিম দোকানদারকে মোবাইল ফোনে ব্ল্-ুটুথ দিয়ে দিয়েছি মাত্র।
লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নয়। উভয়ে আপোষ মীমাংসা করে আমার কাছে আসলে আমি মীমাংসা পত্রে দেখিলাম বলে স্বাক্ষর করেছি মাত্র।
এবিষয়ে লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রবিউল হোসেন বলেন, আদালত থেকে মামলাটি লামা থানায় তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলাটি এখনো থানার নিয়মিত মামলা হিসেবে নম্বর পড়েনি। রেগুলার মামলা হিসেবে এন্ট্রি হলে তদন্তের কাজ শুরু করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.