• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
রাবিপ্রবি’তে জুলাই বিপ্লবের স্মরণে র‌্যালি ও দোয়া অনুষ্ঠিত                    পার্বত্য চট্টগ্রামে ছয় মাসে ১০৩টি মানবধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে                    কাপ্তাইয়ে সাতটি দোকান পুড়ে ছাই                    জুরাছড়িতে এসডিজির স্থানীয়করণ এবং ত্বরানিত লক্ষে কর্মশালা                    আহত অবস্থায় উদ্ধার করা সাম্বার হরিণটিকে বাঁচানো গেল না                    রাঙামাটিতে সাংবাদিকতা ও ফ্যাক্ট চেক বিষয়ক যুব প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত                    রাবিপ্রবি’র রিজেন্ট বোর্ডের ৭ম সভা অনুষ্ঠিত                    রাবিপ্রবি`র নির্মানাধীন দুটি ভবন থেকে চাঁদার দাবিতে দুর্বৃত্তদের সশস্ত্র মহড়া                    রাঙামাটি জেলা পরিষদে নিয়োগ ও শিক্ষা বৃত্তিতে বৈষম্য বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন                    রাঙামাটিতে এইচএসসির পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক                    বিলাইছড়িতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন                    রাবিপ্রবি’তে একাডেমিক কাউন্সিলের ১২তম সভা অনুষ্ঠিত                    রাবিপ্রবি’তে পরিকল্পিত বনায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন                    রাঙামাটিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে সনাক-টিআইবি’র অ্যাডভোকেসি সভা                    খাগড়াছড়িতে বীর শহীদদের প্রতি আরাফাত রহমান কোকোর ক্রীড়া পরিষদের শ্রদ্ধাঞ্জলী                    সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের গ্রেড উন্নীতকরণের দাবীতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি                    পাহাড়ে খড়ের পরিবর্তে শুকনা কলা পাতায় মাশরুম চাষে সাফল্য                    লংগদুতে গৃহবধূকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে এক যুবক আটক                    পাহাড়ে হাতি ও মানুষরে দ্বন্দ্ব কমছে                    রাঙামাটিতে ৮৫ হাজার ৮৬০ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস খাওয়ানো হবে                    শিশুর যৌন নির্যাতনকারী দাদুকে আটক করেছে পুলিশ                    
 
ads

রাঙামাটিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আলোচনা সভায়
জুম্ম জনগোষ্ঠীকে অশান্ত রেখে পার্বত্যাঞ্চলে কেউই শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না-উষাতন তালুকদারএমপি

ষ্টাফ রিপোর্টার : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 08 Mar 2016   Tuesday

আদিবাসী জুম্ম জনগোষ্ঠীকে অশান্ত রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামে কেউই শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন রাঙামাটির ২৯৯নং সংসদীয় আসনের নির্বাচিত সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার।


তিনি অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে সবকিছুতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল রয়েছে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন চায় না। তারা এখান থেকে জুম্মদের বিতাড়ন করতে চায়, তারা পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনটি মন্ত্রী পরিষদে পাশ করিয়ে সংসদে উত্থাপন করতে দিচ্ছেন না।


তিনি আরও বলেন, আদিবাসী জুম্ম নারীরা একদিকে নারী হিসেবে যেমনি বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে কেন আদিবাসী হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেছেন সেই হিসেবেও তারা বঞ্চনা, উপেক্ষা ও লাঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। এজন্য নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে জুম্ম নারীদের আন্দোলন-সংগ্রামের অধিকতর সম্পৃক্ত হতে হবে।


মঙ্গলবার রাঙামাটিতে আর্ন্তজাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সহ-সভাপতি সোনারানী চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কল্পনা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সভাপতি জড়িতা চাকমা, সিএইচটি নারী হেডম্যান-কারবারী নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি সমাপ্তি দেওয়ান, মানবধিকার কর্মী মুক্তাশ্রী চাকমা সাথী, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদকা জুয়েল চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির নেতা টোয়ের চাকমা। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারশনের সাধারন সম্পাদক রিমিতা চাকমা।

 

এর আগে বিভিন্ন দাবী দাওয়া সম্বলিত ফেস্টুন ও প্লেকার্ড নিয়ে একটি র‌্যালী জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বর থেকে শুরু হয়ে বনরুপা এলাকা ঘুরে আবারও শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এমপি সম্প্রতি সংসদে চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী চুক্তি করেছেন, তিনি সংসদেও বলেছেন। তাই উনাকে সংসদেও ধন্যবাদ দিয়েছি। উনি(প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, ওরাও(আদিবাসী) বাংলাদেশের লোক, ওরাও এদেশের নাগরিক। ওদের দুঃখটাও আমাদের বুঝতে হবে। তাই আমি অনুভব করেছি, ওনাকে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে, উনি পড়েছেন মাত্র। ওটা সরকারী কর্মকর্তারা বানিয়ে দিয়েছেন। ওই ভুল তথ্য পড়েছেন তিনি। কিন্তু ওনার আন্তরিকতা আমি দেখেছি।”


তিনি বলেন, রিজার্ভ ফরেস্ট বারে বারে ঘোষণা করা হচ্ছে। এখানে যে অশ্রেণিভুক্ত বন রয়েছে সেগুলো নেয়া হচ্ছে। রাবার চাষ ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অস্থানীয় ব্যক্তিদের নিকট ভূমি ইজারা দেওয়া হচ্ছে। সেনা ও বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন, বিলাসবহুল পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন ইত্যাদির নামে হাজার হাজার একর জমি অধিগ্রহণ, হুমুক দখল ও জবরদখল করা হচ্ছে। আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, প্রথাগত প্রতিষ্ঠান, মৌজাবাসী ও সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিকদের সাথে কোনরূপ আলোচনা ও সম্মতি ব্যতিরেকে এসব ভূমি অধিগ্রহণ, হুকুমদখল বা জবরদখল করা হচ্ছে।


সাংসদ উষাতন তালুকদার জুম্ম নারীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আজকে নিরাপত্তা নেই। চরম নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। আর নারীরা তো আরও বেশী নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এমনিতর বাস্তবতায় আমরা বসবাস করছি। তাই চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া কোন গতি নেই। চুক্তি বাস্তবায়ন করার জন্য সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে করতে হবে। ঘরে বসে থাকলে হবে না। নিজেদের অধিকার নিজেদেরকেই আদায় করে নিতে হবে।’


উষাতন তালুকদার এমপি সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেন, গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর এমনভাবে আশাহত, আশাভঙ্গ ও মর্মাহত অবস্থায় রয়েছেন, ঠিক কি যে করবেন উনি ভেবে উঠতে পারছেন না। উনি একজন উচ্চ শিক্ষিত লোক। ইংরেজীতে অনার্স পাস করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। দীর্ঘ দিন ধরে উনি রাজনীতি করেছেন, প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। মানুষ হিসেবে ভাল। কিন্ত ইদানিং উনার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। উনার মনে কেন যেন শান্তি নেই। কেন যেন কি হয়েছে। উনি অনেকটা দল থেকে বিচ্ছিন্ন, ক্ষমতা থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়েছেন।


তিনি আরও বলেন, এমপি হলে সরকারী দলে থাকলে অবশ্যই মন্ত্রী হওয়া যায়। মন্ত্রী হওয়া মানে স্বর্গে যাওয়ার মত। স্বর্গে আরাম-আয়াসে থাকা যায়। নিজেকে উপলদ্ধি করা যায়। এমনিতর অবস্থায় থেকে দীপংকর তালুকদার আজকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে উনি স্বাভাবিক নন। কেননা যে ব্যক্তি পরিবারের দুই বড় ভাইকে হারিয়েছেন,যে ব্যক্তি ছাত্রজীবন থেকে সবকিছুই ত্যাগ করে অজীবন ত্যাগী বিপ্লবী সেই সন্তু লারমাকে বলেছেন তুমি মিথ্যা বলার কারণে তোমার জিভ ছিঁড়ে দেয়া হবে। জিভ ছিঁড়ে দেয়ার সাহস এসব অসভ্য বর্বর কথা বলার সাহস উনি(দীপংকর তালুকদার) কিভাবে পান। কোথা থেকে পান। এখানে আসল কথা হল এভাবে কথা না বললে তো উনি দৃষ্টি আকর্ষিত হবেন না। প্রধানমন্ত্রী ও দলের কাছে আকর্ষিত হবেন না। কারণ উনি(দীপংকর তালুকদার) ডেইথ কেস, গণ্ কেস। উনাকে ঢাকায় কেউই গুনেন না, এখানকার মানুষও গুনেন না। তাই উনি এখন পাগলের প্রলাপ বকে যাচ্ছেন। পাগলে কিনা বলে ছাগলে কিনা খায় এমনিতর অবস্থা হয়েছে।

 

তিনি দীপংকর তালুকদারকে অরাজনৈতিক সুলভ আচরণের কথাবার্তা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনি এসব অরাজনৈতিক সুলভ আচরণের কথাবার্তা বলে  এলাকার লোকজনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, এখানকার পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে অস্থিতিশীল পরিস্থিত সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। এসব অরাজনৈতিক সুলভ আচরণ থেকে আপনি বিরত থাকুন।  


বিশেষ অতিথিে বক্তব্যে মঙ্গল কুমার চাকমা বলেন, আদিবাসী নারীরা আজকে নানা সহিংসতার শিকার হচ্ছে, যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। আজকে তারা স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে, ঘাটে জল আনতে গেলে, ঘরে যদি একা থাকে, জঙ্গলে যদি লাকড়ি আনতে যায়, সেখানে তাদেরকে ধর্ষণ, নিপীড়ন, অপহরণ করা হচ্ছে। এভাবে আদিবাসী নারীদের প্রায়ই সহিংসতা, সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সহিংসতার শিকার হতে হচ্ছে। সংখ্যাগুরু জাতির একজন নারীর চেয়ে আদিবাসী নারীরা তিনগুণ নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে।


তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে এখনো পূর্বের মতে আদিবাসী জুম্ম নারীদের উপর সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে তার মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’তিনি অভিযোগ করে বলেন, আদিবাসীদের ভূমি বেদখলের উদ্দেশ্যে এবং আদিবাসীরা যাতে তাদের বাস্তুভিটা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় সে লক্ষেও আদিবাসী নারীদের উপর সহিংসতা চালানো হচ্ছে।


জনসংহতি সমিতির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কল্পনা চাকমা বলেন, ‘চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে এবং সরকারের সম্প্রসারণবাদী মনোভাব, জুম্ম জাতীয় অস্তিত্ব ধ্বংস করার মনোভাব, ভূমি বেদখলের যে হীন ষড়যন্ত্র, জুম্মদেরকে এখানে সংখ্যালঘু করার যে ষড়যন্ত্র সে ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে করতে হবে।


আলোচনা সভায় বক্তারা পার্বত্য নারী সমাজ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে পূর্বের ন্যায় আদিবাসী নারীরা ধর্ষন, হত্যাসহ নানান নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বক্তারা আদিবাসী নারীদের অধিকার পেতে হলে ও এসব নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তির পেতে হলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের আদিবাসী নারীদের অধিকতর অংশ গ্রহনের আহ্বান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
এই বিভাগের সর্বশেষ
আর্কাইভ