বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহসভাপতিকে কুপিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার নাম মংশৈনু মারমা (৫৪)। গেল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্য বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় শুক্রবার মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ জানায়,গেল বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি বাইশারী বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন মংশৈনু মারমা। বাজারের দূরবর্তী মারমা শ্বশ্মানের পাশে রাস্তায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের ধারণা পারিবারিক কোনো সমস্যা থেকে এ হত্যাকান্ড ঘটনা ঘটেনি। এই হত্যাকান্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা। বাইশারী ইউনিয়নের চাক পাড়ার বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে গলা কেটে হত্যাকান্ডের সঙ্গে এ যোগসূত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয়রা। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে আইএস জড়িত কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহতের সন্তান উশৈথোয়াই মারমা জানান, তার বাবার সঙ্গে কারোর কোনো শত্রুতা নেই। পারিবারিকভাবেও কোনো ঝামেলা নেই। কৃষি কাজ করে সাদামাতা জীবন ধারণ করতেন। কি কারণে তার বাবাকে খুন করা হয়েছে এখনো তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না। বাইশারী বাজারের স্থানীয় নূর আলম ও স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, তার সঙ্গে বাঙ্গালী লোকজনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সবাই তাকে ভালো মানুষ হিসেবে জানত। কোনো ধরণের ঝামেলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। গেল বৃহস্পতিবার রাতে বাইশারী বাজার দূরবর্তী এলাকার মারমা শ্বশ্নান ঘাটের রাস্তার পাশে আ’লীগ নেতা মংশৈনু মারমাকে কুপিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে জেলা শহরের নিজ বাসায় গেল বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরের পুরোহিত পুরোহিত বাবুল চক্রবর্তীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরে ২৩ বছর ধরে পুরোহিত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই ঘটনায় তার ছেলে রাহুল চক্রবর্তী বাদী হয়ে সদর থানায় জিডি করেছেন। জানা গেছে, গেল বৃহস্পতিবার সকাল ভোর পাঁচটায় অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক শহরের বনরূপা বাসার ভিতরে ছুরি হাতে প্রবেশ করে। অজ্ঞাত পরিচয় ওই যুবকের মুখ বাধা ছিল। ছুরি হাতে ওই যুবককে বাবুল চক্রবর্তীর পুত্রবধূ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে যুবক পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গেল ১৩ মে জেলার বাইশারী চাক পাড়ার এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে কুপিয়ে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মিয়ানমারের দুই রোহিঙ্গাসহ চাক সম্প্রদায়ের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রিমান্ডে তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
বাইশারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান জানান, গেল বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে মংশৈনু মারমার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, গেল দুই মাসে সাধারণ মানুষের উপর আক্রমন নিয়ে আমরাও চিন্তিত আছি। এই ঘটনাগুলো নিয়ে পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থা সর্তক অবস্থায় আছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সচেতন মানুষ এগিয়ে এসে অপরিচিত বা সন্দেহ জনক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হলে সাধারণ মানুষের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.