রাঙামাটিতে শিল্প ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদান রাখায় বৃহস্পতিবার ১০ জন গুনী ব্যক্তিকে সন্মাননা প্রদান করেছে জেলা শিল্পকলা একাডেমী।
সম্মননা প্রাপ্তরা হলেন নাট্যকলায় ঝিমিত ঝিমিত চাকমা, চারুকলায় রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, যাত্রা শিল্পে নন্দ রাণী চাকমা, কন্ঠ সংগীতে ফনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নৃত্যকলায় হুমায়ুন কবীর, যন্ত্র শিল্পে ধারশ মনি চাকমা, লোক সংস্কৃতিতে আনন্দলতা চাকমা, আবৃত্তিতে অঞ্জুলিকা খীসা, কন্ঠ সংগীতে অমর শান্তি চাকমা ও যন্ত্র শিল্পে ঝুলন দত্ত।
জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে গুনীজন সন্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান,পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান ও জেলা পরিষদ সদস্য মনোয়ারারা আক্তার জাহান।
অনুষ্ঠানে রাঙামাটি জেলায় শিল্প ও সাংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ১০ জন ব্যক্তির হাতে সন্মাননা স্মারক, ১০হাজার ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৫হাজার মোট ৩৫হাজার ও সার্টিফিকেট তুলে দেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তার সাহিত্য সংস্কৃতি জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। পাহাড়ের পিছিয়ে থাকা এসব জনগোষ্টীর কিছু আলোকিত মানুষ পার্বত্য সংস্কৃতিকে এতদুর এগিয়ে নিয়েছে। তাদের অবদান অনস্বীকার্য। জীবদর্শায় এমন কিছু গুনীব্যাক্তিকে জেলা পরিষদ ও শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা দিয়েছে যা অনন্য দৃষ্টান্ত। এমন দৃষ্টান্ত আগামীতে সমাজের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়ার বিকাশে অনন্য প্রেরণা যোগাবে। তিনি বলেন, যে জাতি গুনীজনদের সম্মান দেয়না তারা কখনোই সম্মানিত হতে পারে না, দেশও এগোতে পারে না।
তিনি সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে নিয়মিত সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বিকাশে রাঙ্গামাটি শিল্পকলা একাডেমির নতুন ভবন নির্মার্ণে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের প্রকল্পে অর্ন্তরভুক্ত করতে পার্বত্য মন্ত্রনালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও প্রতিশ্রুতী ব্যক্ত করেন। এছাড়া রাঙ্গামাটি জেলায় ক্রীড়াঙ্গণের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে রাঙামাটি জেলা ফুটবল লীগ শুরুর জন্য ১০লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেওয়ার ঘোষনা দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফিরোজা বেগম চিনু এমপি বলেন, পাহাড়ের গুনীজনদের খুজে বের করে শিল্পকলা একাডেমি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মাননা জানিয়ে তারা নিজেরাই সম্মানিত হয়েছেন। এতোদিন ধরে নিরবে নিভৃতে যারা কাজ করে গেছেন সে আলোকিত মানুষগুলো পাহাড়ের সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তারা আজ যে স্বীকৃতি পেয়েছেন তাতে পাহাড়ের বসবাসরত সকল অধিবাসী আন্দন্দিত ও গর্বীত। তিনি গুনী সম্মাননা প্রদান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা বলেন, পাহাড়ের সংস্কৃতিকে যারা লালন করে চলেছেন তাদের সম্মানিত করা নৈতিক দায়িত্ব। সে অনুভব থেকে জেলা পরিষদ সম্মাননা প্রদানে শিল্পকলা একাডেমিকে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, মানুষ সবসময় তার কর্মের স্বীকৃতি প্রত্যাশা করে। আর সে স্বীকৃতি তাকে সামনে অগ্রসর করে, উদ্দ্যেমি করে নতুন কাজের প্রেরণা যোগায়। তিনি সম্মাননা প্রাপ্ত প্রত্যক গুনীজন তাদের দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমের সামান্যতম পূরণ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.