পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি’(বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু) উপলক্ষে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর সভাপতি প্রসিত খীসা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের এবং প্রবাসী পাহাড়িদের বৈসাবি শুভেচ্ছাসহ আন্তরিকভাবে মঙ্গল কামনা করেছেন।
পাশাপাশি তিনি এ উৎসব ভ-ুল করার নানা হুমকিমূলক অপতৎপরতা, ষড়যন্ত্র-সাম্প্রদায়িক উস্কানি, আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল, র্যালি-খেলাধুলা অনুষ্ঠান আয়োজনে খাগড়াছড়ি সদর, বাঘাইছড়ি-মানিকছড়ি-সিন্দুকছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে বাধা প্রদান ও হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানিয়েছেন।
রোববার ইউপিডিএফ’র প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বার্তায় এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রেস বার্তায় ইউপিডিএফ প্রধান প্রসিত বিকাশ খীসা বৈসাবি উপলক্ষে তিন দিন সরকারি ছুটির দাবি যৌক্তিক মন্তব্য বলে উল্লেখ করে বলেছেন, বর্তমান বাস্তবতা এমন যে বৈসাবি উৎসব কেবল আর বিনোদনের উপলক্ষ নয়। সকল জাতিসত্তার মিলনের ও ঐক্যের ক্ষেত্র হচ্ছে এ উৎসব। সব ভেদাভেদ, সংকীর্ণতা ভুলে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার করারও এটি উপযুক্ত ক্ষণ। স্বজন, সমাজ ও শিকড়ের সাথে নিজেদের বন্ধন আরও দৃঢ় করার ভিত্তি।’
প্রেস বার্তায় এ নেতা ভবিষ্যতে অনাগত দিনগুলো যাতে নিরানন্দময় না হয়, বাবুছড়া ও বগাছড়িবাসীর মত যাতে কারোর জীবন থেকে বৈসাবির মত একটি সর্ববৃহৎ জাতীয় উৎসব হারিয়ে না যায়, সে লক্ষ্যে চেতনাবোধ সম্পন্ন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরষ্পরের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রেস বার্তায় দীঘিনালার বাবুছড়া ও বগাছড়ির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করে ইউপিডিএফ প্রধান আরও বলেন, এ দু’টি স্থানের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের উৎসব পালন থেকে বিরত রয়েছে। আনন্দ উৎসব হয় সবাইকে নিয়ে। স্বজনহীন আনন্দ হয় না, বৈরী পরিবেশেও উৎসব জমে না। বগাছড়ি ও বাবুছড়ার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের লোকজনের উৎসব বঞ্চিত দশা--অত্যন্ত বেদনাদায়ক, যা যে কোন সচেতন ব্যক্তিকে ভাবিয়ে তুলতে বাধ্য করে।
প্রেস বার্তায় আরও বলা হয়, সারা দেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে আগামীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের যে কোন স্থানে বাবুছড়া-বগাছড়ির পরিণতি নেমে আসলে তাতে অবাক হবার কিছু নেই বলে আশঙ্কা রয়েছে। প্রেস বার্তায় বৈসাবি উৎসবের প্রাক্কালে গুইমারা-দীঘিনালা-বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষার্থী-নিরীহ লোকজনকে ধরপাকড়-মারধর-হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন এ নেতা।
প্রেস বার্তায় ‘বাঙালি জাতীয়তা’ চাপিয়ে দিয়ে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১ নির্দেশনা জারি রেখে বা বৈসাবি উৎসব বানচালের ষড়যন্ত্র চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ঐক্য সংহতিতে ফাটল ধরানো কিংবা ন্যায় সঙ্গত আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়া যাবে না বলে ইউপিডিএফ প্রধান মন্তব্য করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.