লামা থানার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম শহর থেকে চুরি হওয়া সিএনজি গাড়ী’র মামলার সূত্র ধরে মঙ্গলবার ৫টি সিএনজি বান্দরবানের লামা উপজেলা থেকে উদ্ধার করেছে চট্টগ্রামের পাচঁলাইশ থানা পুলিশ।
তবে চোরাই সিএনজি গাড়ী রাখার দায়ে পুলিশ ৫জনকে আটক করলেও রহস্য জনক কারণে ৪জনকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় জনসাধারণ ও বৈধ সিএনজি গাড়ীর মালিকরা।
মামলার তদন্তকারী অফিসার পাচঁলাইশ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নুরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি শক্তিশালী চোরাই সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম মহানগরী সহ আশপাশের থানা থেকে সিএনজি গাড়ী চুরি করে আসছে। মাস দু’য়েক আগে চট্টগ্রামের পাচঁলাইশ এলাকার মোস্তাক আহমদ নামক এক ব্যবসায়ীর একটি সিএনজি চুরি হলে পাচঁলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন চালক মোঃ খলিল ও তার জিম্মাদার মোঃ দুলাল। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একে একে বের হয়ে আসে একাধিক গাড়ী চুরির চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
তিনি আরো জানান, খলিলের দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে পাচঁলাইশ থানা পুলিশ গাড়ী চুরি সিন্ডিকেটের সদস্য মোঃ সাহাবুদ্দিন(৩৫) কে সীতাকুন্ড ও মোঃ মনির(৪৫) কে ভোলা থেকে গ্রেফতার করে। এই দু’জনের থেকে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে এবং তাদের সহায়তায় ভোলার বাসিন্দা আব্দুল জব্বারকে ঢাকা মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জব্বারকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ থানাধীন লন্ডন বাজারে চোরাই সিএন্ডজিগুলো রয়েছে বলে তথ্য দেন। তার প্রাপ্ত তথ্যমতে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার লন্ডনবাজারে অভিযান চালিয়ে শামসুদ্দিনের গেরেজ থেকে ৩টি চোরাই সিএনজি উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে উদ্ধারকৃত সিএনজি’র মধ্যে মামলার বাদী মোস্তাক আহমদ-এর হারিয়ে যাওয়া সিএনজিটি না থাকায় গেরেজ মালিক শামসুদ্দিনকে পুণরায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাকী গাড়ী গুলো বান্দরবানের লামা বাজারে রয়েছে জানান পুলিশকে। গাড়ী চোরাই সিন্ডিকেটের আটককৃত সাহাবুদ্দিন, মনির ও জব্বারকে লামার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান তাদের আরেক সহযোগী শাহজাহান(৪৫) লামার সমস্ত তথ্য জানেন। শাহজাহান বর্তমানে নারায়নগঞ্জে রয়েছে। তাদের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ থেকে শাহজাহানকে আটক করে শাহজাহানকে নিয়ে ১৯ জানুয়ারী লামা থানার সহযোগিতায় লামা বাজারের অভিযান চালিয়ে গাড়ী চোরের অন্যতম আরেক সদস্য মোঃ আজাদকে গ্রেফতার করে তার মাধ্যমে ৫টি চোরাই সিএনজি উদ্ধার করে।
এসময় লামায় সিএনজি গুলো দর্জি ব্যবসায়ী খলিফা মোঃ মোজাম্মেল থেকে ১টি, মুদি দোকানদার মাইকেল আইচ থেকে ২টি, হার্ডওয়ার দোকানদার মোঃ রিদুয়ান থেকে ১টি ও মোঃ জাহেদের পিতা কামাল মাঝি থেকে ১টি সিএনজি উদ্ধার করা হয়। চোরাই সিএনজি ক্রয় করা এবং রাখার দায়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে পাচঁলাইশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের উপ-পরিদর্শক নুরুল ইসলাম।
এ দিকে বৈধ সিএনজি মালিকগণ লামার চোরাই সিএনজি ক্রয়কৃতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা আরও দাবী করেন, এখনো অনেক চুরাই সিএনজি গাড়ী লামার বিভিন্ন পাহাড়ী রাস্তায় চলাচল করছে।
অপরদিকে স্থানীয় জনসাধারণ ও বৈধ সিএনজি গাড়ীর মালিকরা অভিযোগ করেছেন, চোরাই সিএনজি গাড়ী রাখার দায়ে লামা থানায় ৫জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও রহস্য জনক কারণে ৪জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রবিউল হোসেন-এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ৫ চোরাই সিএনজি গাড়ীসহ এ ৫জনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা সত্যতা নিশ্চত করেছেন।
লামা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, চট্টগ্রামের পাচঁলাইশ থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক নুরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে মঙ্গলবার লামায় অভিযান চালিয়ে লামা বাজারের দর্জি দোকানদার মোঃ মোজাম্মেল থেকে ১টি, মুদি দোকানদার মাইকেল আইচ থেকে ২টি, হার্ডওয়ার দোকানদার মোঃ রিদুয়ান থেকে ১টি ও মোঃ জাহেদের পিতা কামাল মাঝি থেকে ১টি সিএনজি উদ্ধার করা হয়েছে। একই সাথে চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মোঃ আজাদ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.