বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ, উৎপাদন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবীতে কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) এর প্রধান ফটকে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কেপিএম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ)নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিবিএ সভাপতি তৌহিদ আল মাহবুব চৌধুরী। বক্তব্যে রাখেন সহ ক্রীড়া সম্পাদক সিবিএ আবুল বশর, সহ-স্বেচ্ছাসেবক প্রধান নজির আহমদ, বেলাল হোসেন, উপদেষ্টা সৈয়দ আবদুর রহীম, জাহাঙ্গীর আলম, আইন বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিন, কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুনুর রহমান, উপদেষ্টা আতাউর রহমান,সিবিএ সাধারণ সম্পাদক হাজী আবদুল ওহাব বাবুল প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মোঃ সেলিম।
বক্তারা বলেন, পে-স্কেল ঘোষিত হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা দেয়া হলেও একই প্রতিষ্ঠানে পাশাপাশি চাকরী করেও শ্রমিকরা বৈশাখী ভাতা পায়নি। তারা বলেন মিল কর্তৃপক্ষের সীমাহিন অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে রাষ্ট্রয়ত্ত কর্ণফুলী পেপার মিল আজ হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। গত জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী মাসে অর্থ সংকট দেখিয়ে মিলের ৩৪২ জন দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারীকে অন্যত্র বদলী করা হয়। তখন কর্তৃপক্ষ এসব শ্রমিককে বদলী পরবর্তী মিলের উৎপাদন ও আর্থিক উন্নতির ঘোষণা দেন।
কিন্তু বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বদলীর পরও মিলের উৎপাদন ও আর্থিক অবস্থার কোন উন্নতিতো হয়নি বরং প্রতিষ্ঠানের আরো অবনতি ঘটছে। শ্রমিক বদলীর প্রেক্ষিতে প্রতি মাসে মিলের প্রায় ১ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। তথাপি বর্তমানে শ্রমিকদের তিন মাসের অধিকাল ভাতা , ২০% এরিয়ার ও মার্চ মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন,মিলের তিনটি মেশিন সচল থাকলেও গত দু’মাস ধরে ২নং পেপার মেশিনের উৎপাদন অজ্ঞাত কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে পর্যাপ্ত কাঁচামাল থাকলেও সুপরিকল্পিতভাবে লবণ,সোডা,চুন,টেলকাম পাউডারসহ নানা ধরনের উৎপাদন সহায়ক কেমিক্যালের অভাবে মিলের কাগজ উৎপাদনে ধস নেমেছে। বর্তমানে দৈনিক ৩০/৩২ টনের বেশি কাগজ উৎপদিত হচ্ছে না। অথচ সঠিকভাবে কাঁচামাল সরবরাহ করা গেলে প্রতিদিন ৬০/৭০ মেট্টিক টন কাগজ উৎপাদন সম্ভব বলে তারা দাবী করেন।
বক্তারা বর্তমান কর্তৃপক্ষের দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, সম্প্রতি মিল কর্তৃপক্ষ সিবিএ এর সাথে পরামর্শ না করে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতি টন ১৮ হাজার টাকা দরে ৫০০ টন লবণ আমদানীর কার্যাদেশ দেয়। অথচ একই ধরনের লবণ প্রতিটন অপর দরদাতা ১৫ হাজার ৭’শ টাকা হিসাবে সরবরাহ করতে চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি।
তিনজন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ পূর্বক (জিএম এমটিএস,অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ওয়ার্কসপ), মেট্টোন/সহ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা) অনতিবিলম্বে কারখানা থেকে তাদের বদলীসহ এক সপ্তাহের মধ্যে মিলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ করা হলে তারা আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে বলে সমাবেশ থেকে ঘোষনা দেয়া হয়।
এছাড়া শ্রমিক নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে মজুরী কমিশন বাস্তবায়নের জন্য শ্রমিক বান্ধব বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবী রাখেন। সমাবেশ শেষে ১০ দফা দাবী সম্বলিত একটি পত্র মিলের এমডিকে দেয়া হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.