শনিবার রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সালের আইনের ইংরেজী ও বাংলার (দ্বিতীয় সংস্করণ) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক বলেছেন,সময়ের বিবর্তনে পার্বত্যাঞ্চলের পুরোনো আমলের আইনসমূহ সংস্কার করে তা যুগোপযোগী করা হলে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠা পাবে তেমনী আইনের ক্রুটি বিচ্যুতিগুলো নিরসন সম্ভব হবে। তিনি এ পর্যন্ত সুপ্রীম কোর্টের দেয়া পার্বত্য অঞ্চলে আইনের আলোকে নিষ্পত্তি হওয়া সকল মামলার রায়সমূহ একত্রিত করে গ্রন্থ আকারে প্রকাশের জন্য পরামর্শ দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সন্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সন্মেলন কক্ষে এএলআরডি ও জেলা আইনজীবি সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা)। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি জেড আই খান পান্না প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সালের আইনের বইয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্যে দেন চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যারিষ্টার দেবশীষ রায়। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে রাখেন রাঙামাটি জেলা জজ মোঃ কাউসার, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি প্রতীম রায় পাম্পু। অনুষ্ঠানে তিন পার্বত্য জেলার আইনজীবি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় ও আইনজীবি প্রতিকার চাকমার সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সালের আইনের ইংরেজী ও বাংলার(দ্বিতীয় সংস্করণ) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
সভাপতির বক্তব্যে সন্তু লারমা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসন ব্যবস্থার লক্ষে ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। কিন্তু পার্বত্য চুক্তির ১৮ বছর অতিবাহিত হলে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়িত হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনকে এখনো কার্যকর করা হয়নি, অবহেলিত উপেক্ষিত করে রাখা হয়েছে। এ কারণে এ অঞ্চলের বিচার বিভাগের আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদের যে ভূমিকা রয়েছে তা করতে পারছে না। পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের বিচার বিভাগের যে সমস্ত অসংগতি রয়েছে সেগুলো দুর করা ও সংশোধন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসংখ্য সমস্যা বিরাজমান রয়েছে। যার নিরসনের একমাত্র নির্ভর করছে এ অঞ্চলের সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা ও গণমুখী শাসন ব্যবস্থা। কিন্তু এ অঞ্চলে দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে সেনা শাসন চলার কারণে এখানকার আইন, বিচার ও শাসন ব্যবস্থা গণমুখী হতে পারছে না। যেখানে সেনা শাসন রয়েছে সেখানে বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে আঞ্চলিক পরিষদ,জেলা পরিষদ, প্রথাগত নেতৃত্ব সার্কেল চীফ, হেডম্যানরা কি করবে।
হাই কোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের আইন সমূহ জীবন্ত, সার্থক ও কার্য উপযোগী কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এজন্য এসব আইনের সংশোধন প্রয়োজন । আর এইসব আইনের অসম্পূর্ণতা পুরণ করে সময় উপযোগী করা দরকার।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.