মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ আরকান আর্মি (এ.এ) সন্ত্রাসীদের ধরতে বান্দরবানের থানছিতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবারও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সাঙ্গু রিজার্ভসহ সম্ভাব্য এলাকাগুলোতে চিরুনী অভিযান পরিচালনা করেছে।
বিজিবি’র একটি সুত্র জানায়, শুক্রবার সকালে সীমান্তে যৌথ বাহিনীর কম্বিং অপারেশনের মুখে আরকান আর্মি সদস্যরা পিছু হটালেও যৌথ বাহিনীর একটি দল বড় মদক ক্যাম্প থেকে ৪/৫ কিলোমিটার দক্ষিনে ঙারেসাক্ষ্যং নামক স্থানে আরকান আর্মিদের ১টি আস্তানার সন্ধান পান। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বিকাল থেকে আস্থানাটি ঘেরাও করে রেখেছেন। তবে দূর্গম পাহাড়ী এলাকা ও বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে অভিযান পরিচালনা করতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থানছির বড় মদক বিজিবি ক্যাম্প বিজিবির উপর হামলার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজামান খাঁন ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহম্মেদ। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কোন অবস্থাতে যেন বিদেশী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের দেশের মাটি ব্যবহার করতে না পারে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সর্তকতার সাথে সাড়াশি অভিযান পরিচালনার জন্য নির্দেশে প্রদান করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ নির্দেশনা পাওয়ার পর সীমান্ত এলাকায় বিপুল সংখ্যাক সৈন্য মোতায়েন করে শক্তি বৃদ্ধি করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একটি সুত্র জানিয়েছে, এক প্রভাবশালী ও এক রাজনৈতকি নেতার সহযোগীতায় আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেট জাপলং থেকে সর্বমোট ১৫টি আ্যারাবিয়ান ঘোড়া ক্রয় করে ট্রাক ভর্তি করে বান্দরবানে নিয়ে আসা হয়। ১৫টি ঘোড়া থেকে ৭টি নিয়ে যায় বান্দরবান হয়ে থানছি ও পরবর্তীতে বড় মদক পর্যন্ত। বড় মদক নিয়ে যাওয়ার পথে নৌকায় ৩টি মারা যায়। এর মধ্যে বাকি ৮টি ঘোড়া রাঙামাটি জেলা রাজস্থলী বাজারে তাদের রক্ষনা-বেক্ষন করে রাখা হয়। পরবর্তীতে ২টি ঘোড়া অসুস্থ হলে ৬টি ঘোড়া ট্রাক যোগে ১৮ই আগষ্ট থানছি বাজারে বাস ষ্টেশনে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পৌছায়। পরদিন ১৯ আগষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচীতে থাকায় থানছি বাজারে প্রবেশ করতে না পারায় ১৯আগষ্ট আলিকদম সড়ক পথে তিন্দু মূখ হয়ে তিন্দু বাজারে ৬টি ঘোড়া পৌছানো হয়। তিন্দু বাজারে ৪/৫দিন রাখার পর মঙ্গলবার তিন্দু বিজিবি ক্যাম্প অধিনায়কের নেতৃত্বে বিজিবির সদস্যরা ঘোড়া আটক করতে স্বক্ষম হন। একই সাথে বড় মদকে অবস্থানরত ৪টি ঘোড়া নাসালাং পাড়া থেকে আটক করেন বড় মদক বিজিবি’র সদস্যরা। বুধবার বিজিবিরা টহল দিতে গেলে আরকান আর্মির সাথে সংঘর্ষ ও গুলাগুলি বিনিময় হয়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ২২জুলাই একটি পিকআপ যোগে বান্দরবানের বালাঘাটা সড়ক হয়ে ৭টি ঘোড়া বান্দরবানে প্রবেশ করে ১৭আগষ্ট আরো একটি পিকআপ যোগে ৬টি ঘোড়া বান্দরবান প্রবেশ করার পথে বালাঘাটা এলাকায় স্থানীয়রা ইজারদারেরা টোলের টাকা দাবী করলে এক ব্যক্তি নিজেকে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলির ইউএনও পরিচয় দিয়ে হুমকি দেয়। ইউএনও’র হুমকিতে ইজারাদার টোল আদায় না করে পালিয়ে যায়। বুধবার রাতে রাঙামাটির রাজস্থলী থেকে উদ্ধারকৃত দু’টি ঘোড়ার সাথে থানছি থেকে উদ্ধার করা ঘোড়াগুলোর মিল রয়েছে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটির রাজস্থলি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুজন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তার সাথে ঘোড়ার কোন সর্ম্পক নেই। তিনি এ ব্যাপারে কোন কিছুই জানেন না। কোন প্রতারক চক্র তার নাম ভাঙ্গিয়ে এ কাজ করেছে বলে তিনি দাবী করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.