সভা-সমাবেশের জন্য রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের আগাম অনুমতির বাধ্যবাধকতা আরোপের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ ও অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি।
বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ানের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
প্রেস বার্তায় বলা হয়, গত ১৮ অক্টোবর রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক এক বিশেষ সভায় রাঙামাটি শহরে কোনো সভা-সমাবেশ করতে চাইলে জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় গত ১৭ অক্টোবর রাঙামাটি সরকারী কলেজে দুই দল ছাত্রের মধ্যে মারামারিকে কেন্দ্র করে কলেজের আশেপাশে সৃষ্ট উত্তেজনা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার ফলে উদ্ভূত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর আগেও রাঙামাটি শহরে এ ধরনের বা এর চাইতেও বড় বড় সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পরে পরই আইন-শৃংঙ্খলা বিষয়ক বিশেষ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ১৮ অক্টোবর বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তকে রীতিমত হতবাক করেছে এবং এটি একটি অনভিপ্রেত সিদ্ধান্ত।
প্রেস বার্তায় আরও বলা হয়, রাঙামাটি শহরে বিগত বছরগুলোতে অনেক বড় মাপের সহিংস ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক প্রাণহানি ও ক্ষয়-ক্ষতির মত অবাঞ্ছিত ও দূর্ভাগ্যজনক ঘটনাবলীও বিবেকবান মানুষদের নাড়া দিয়েছে। কিন্তু কখনও সভা-সমাবেশের স্বাধীনতার উপর বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়নি। আইন-শৃঙ্খলাজনিত যে কোন ঘটনার উদ্ভব হলে তার মোকাবেলায় বরাবরই দীর্ঘ মেয়াদী ও সুদূরপ্রসারী কোন পদক্ষেপ গ্রহণের চাইতে স্বল্পমেয়াদী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রবণতা প্রশাসনের রয়েছে। তার প্রতিবিধানের পরিবর্তে গলদঘর্ম হতে দেখা যায়। যারা উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে শান্তি ভঙ্গ করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে কখনই আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয়নি। ফলে বারে বারেই এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটছে।
সভা-সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করে এইসব ঘটনা রোধ করা যাবে বলে আমরা মনে করা যায় না উল্লেখ করে প্রেস বার্তায় দাবী করা হয়, বরঞ্চ এসব পদক্ষেপের ফলে দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিপন্ন হবে। যা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার হরণের সামিল। তবে এক্ষেত্রে যে কোন ধরনের সভা-সমাবেশ করার পূর্বে প্রশাসনকে অবহিত করণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যেতে পারে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.