গ্রেফতারকৃত আয়ুব আলীর মুক্তির দাবী ও ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শনিবার রাঙামাটির কাউখালীতে এলাকাবাসীর ও পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয়।
কাউখালী প্রেস ক্লাবে আয়োজত সংবাদ সন্মেলনে গ্রেফতারকৃত আয়ুব আলীর বৃদ্ধ বাবা খন্দকার সুরুজ মিয়া, আয়ুব আলীর মাতা ফাতেমা বেগম, আয়ুব আলীর স্ত্রী আছমা বেগম, আয়ুব আলীর দুই ছেলেন নাদিম (১১) আর নাহিদ (১৫), প্রতিবেশি মুক্তিযোদ্ধা বাহার মিয়া, ষাটোর্ধ প্রতিবেশি রফিকুল ইসলাম ও ইদ্রিস আলী, চাঁন মিয়, প্রতিবেশি মরিয়ম বেগম,সেলিনা বেগম।
সংবাদ সন্মেলনে আয়ুব আলীর বৃদ্ধ বাবা খন্দকার সুরুজ মিয়া (৭৫) অভিযোগ করেন, চার্জশিট দেয়ার আগে পুলিশ কারো সাথেই কথা বলেনি, এমনকি সাক্ষ্যও নেয়নি। প্রতিবেশি পাহাড়িরা জমির দখল নিতে ষড়যন্ত্র করে আয়ুব আলীকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেওয়া হয়েছে দাবী করে তিনি মামলার পুনঃতদন্তসহ আয়ুব আলীর মুক্তি দাবী জানান।
আয়ুব আলীর স্ত্রী আছমা বেগম বলেন, দুই একর খাস জমিতে গামারি, সেগুন বাগানসহ হলুদ চাষ করে আসছেন আট বছর ধরে। ঘটনার দিন তার স্বামীর সাথে বাগান গিয়ে কাজ শেষে ফিরেছিল। অথচ বিকাল চারটার দিকে ঘর থেকে দোকানে যাওয়ার পথে পুলিশ তাকে রাস্তায় গ্রেফতার করেছে। তিনি আরও বলেন,গত ১১ মাস ধরে তার তিন ছেলেকে নিয়ে খুব অভাবে কষ্টে দিনযাপন করছেন। ছেলেদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে গেছে। ঋণের কিস্তি চালাতে পারছেন না, তাকে লোকজন বিরক্তসহ গালমন্দ করে। বাগানের হলুদ ও গাছ চুরি হয়ে যাচ্ছে। তিনি তার স্বামীর মুক্তির দাবী জানান।
অপরাধ করে মানুষ ঘরে থাকে না, পালিয়ে যেতো। থানায় মেয়েটি আসামীকে শনাক্ত করেনি দাবী করে আছমা জানান,ঘটনার দিন মেয়েটির সাথে থাকা লাল গেঞ্জি পড়া ছেলেটির ওই গেঞ্জিটি পরের দিন থেকে ছেঁড়া অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অথচ এর কারণ খুঁজেনি পুলিশ।
কান্নায় ভেঙে পাড়া আয়ুব আলীর বিমাতা ফাতেমা বেগম (৫৫) বলেন, এমন ভালো ছেলের মা হওয়া গর্বের। তিনি তার ছেলেকে নির্দোষ দাবী করে মুক্তির দাবী জানান।
প্রতিবেশি মুক্তিযোদ্ধা বাহার মিয়া ও চাঁন মিয়া বলেন, ঘটনার নিরপেক্ষ পুনঃতদন্ত হলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আয়ুব আলীকে ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছেন। আয়ুব কখনো কোন অপরাধে জড়িত ছিল না। জায়গা-সম্পত্তি নিয়েই তাকে মিথ্যাাভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
ষাটোর্ধ প্রতিবেশি রফিকুল ইসলাম ও ইদ্রিস আলী (৭০) বলেন, বাগানই কাল হয়েছে আয়ুব আলীর। এভাবে মিথ্যা মামলায় একটি অসহায় পরিবারকে নিঃস্ব করার কোন মানেই হয় না। বঙ্গটিলা এলাকাটি স্থানীয় বাঙালীরা বিভিন্ন বাগান করে আসছে। এসব জমি নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া একটি চিহ্নিত মহল সবাইকে“বার্তা” দিতেই এধরনের মিথ্যা মামলা করানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারী কাউখালী উপজেলার কাশখালী বঙ্গটিলা এলাকার অংশি প্রু মারমা নিজের কন্যা শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে কাউখালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করেন। এ অভিযোগ পুলিশ আইয়ুব আলীকে আটক করে পুলিশ। মামলাটি বর্তমানে রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.