দেশ-বিদেশের বহুল আলোচিত হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের দাখিলের দিন আদালত ১৬ জুন ধার্য্য করেছেন। বুধবার রাঙামাটি জেলা ও জর্জ আদালতে কল্পনা চাকমা মামলার ২২ তম শুনানি দিন ধার্য্য ছিল।
এদিকে, কল্পনা চাকমার অপহরনকারীদের আড়াল করতে তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়সারা প্রতিবেদনের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার রাঙামাটিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট জুয়েল দেওয়ান জানান, রাঙামাটি জেলা জজ আদালতে কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার প্রতিবেদন বুধবার দাখিল দিন ধার্য্য ছিল। তবে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত আগামী ১৬ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদনের দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন,বিজ্ঞ আদালত মামলার অধিদতর তদন্তের জন্য সাবেক পুলিশ সুপার আমেনা বেগমকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিলেও আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিবেদন দাখিলের প্রতীয়মান হয়নি। যদিও এ মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদনে কিছু কিছু শব্দ আপত্তিকর রয়েছে।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন চলাকালে প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সভাপতি জড়িতা চাকমা। বক্তব্যে দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সজীব চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সাধারন সম্পাদক সুপ্রভা চাকমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি বাচ্চু চাকমা, পার্বত্য যুব সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক পাপলু বিকাশ চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী সুইনু মারমা।
সমাবেশে বক্তারা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাবেক পুলিশ সুপার আমেনা বেগমের প্রবিদেন প্রত্যাখান করেন এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতার করে মামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নিউ লাইল্যাঘোনা গ্রাম থেকে অজ্ঞাতনামা দৃস্কৃতকারীরা অপহরন করে নিয়ে যায়। অবশ্যই কল্পনা চাকমার পরিবার ও তার সংগঠনের পক্ষ থেকে সেনা বাহিনীর লেফটেন্যান্ট ফেরদৌসকে দায়ী করেছিল। সরকার জনমতের চাপের মুখে একটি বিচার বিভাগীয় কমিটির গঠন করলেও রিপোর্ট আজও প্রকাশিত হয়নি। অবশেষে এক যুগেরও অধিক সময়ের পর ২০১০ সালের ২১ মে পুলিশ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে পেশ করে। এতে মামলার বাদী ও অপহৃতার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা না রাজি দাবি করে ঘটনার পুনঃতদন্তের জন্য আদালতের কাছে দাবি জানান। আদালত পুনতদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিলে ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে। তবে আদালত সিআইডির দেয়া প্রতিবেদনটি যথাযথ হয়নি তা প্রত্যাখান করে জেলা পুলিশ সুপারকে মামলার অধিকতর তদন্তের করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নিদের্শ দেন। বুধবার পর্ষন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় ২১ বার বাড়ানো হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.